ঢাকা: দেশে ১০ বছরের ব্যবধানে শ্রমজীবী শিশুর সংখ্যা বেড়েছে ৮৬ হাজার ৫৫৮ জন। ২০২২ সালের সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, শ্রমজীবী শিশুর সংখ্যা ছিল ৩৫ লাখ ৩৬ হাজার ৯২৭ জন, যা ২০১৩ সালে ছিল ৩৪ লাখ ৫০ হাজার ৩৬৯।
বুধবার (১৯ জুলাই) আগারগাঁওয়ে বিবিএস ভবনে ন্যাশনাল চাইল্ড লেবার সার্ভে ২০২২- এর প্রভিশনাল প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রকল্প উপ পরিচালক মো. সাদ্দাম হোসেন খান এ তথ্য জানান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
তিনি জানান, জাতীয় শিশুশ্ৰম জরিপ ২০২২ ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ৫-১৭ বছর বয়সী শিশুদের সংখ্যা হলো তিন কোটি ৯৯ লাখ ৬৪ হাজার পাঁচ জন (৩৯ দশমিক ৯৬ মিলিয়ন)। এদের মধ্যে যথাক্রমে শ্রমজীবী ২০২২ সালের সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, শিশু শ্রমিক ৩৫ লাখ ৩৬ হাজার ৯২৭ জন (৮ দশমিক ৯ শতাংশ) এবং শিশুশ্রমে নিযুক্ত শিশুর সংখ্যা ১৭ লাখ ৭৬ হাজার ৯৭ জন (৪ দশমিক ৪ শতাংশ) এবং ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমে নিযুক্ত রয়েছে এ ধরনের শিশুর সংখ্যা ১০ লাখ ৬৮ হাজার ২১২ জন (২ দশমিক ৭ শতাংশ)। যেখানে ২০১৩ সালের শিশুশ্রম জরিপে দেখা গেছে, ৫-১৭ বছর বয়সী শিশুদের সংখ্যা ছিল ৩ কোটি ৯৬ লাখ ৫২ হাজার ৩৮৪ জন। তাদের মধ্যে যথাক্রমে ৩৪ লাখ ৫০ হাজার ৩৬৯ সংখ্যক (৮ দশমিক ৭ শতাংশ) শ্রমজীবী শিশু এবং শিশুশ্রমে নিযুক্ত শিশুর সংখ্যা ছিল ১৬ লাখ ৯৮ হাজার ৮৯৪ (৪ দশমিক ৩ শতাংশ) এবং ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমে নিযুক্ত শিশুর সংখ্যা ছিল ১২ লাখ ৮০ হাজার ১৯৫ জন (৩ দশমিক ২ শতাংশ)।
জাতীয় শিশুশ্রম জরিপ ২০১৩ এবং ২০২২-এর ফলাফলের তুলনা করলে দেখা যায়, ২০১৩ সালের তুলনায় ২০২২ সালে শিশু এবং শিশুশ্রমে নিয়োজিত শিশুদের সংখ্যা সামান্য বেড়েছে।
গত ১০ বছরে জনসংখ্যা বাড়ার তুলনায় এ বৃদ্ধি খুবই নগণ্য। ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমে নিয়োজিত শিশুদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমের এ উল্লেখযোগ্য হ্রাস আমাদের দেশ থেকে শিশুশ্রম নির্মূল করার জন্য সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরও জানান, জাতীয় শিশুশ্রম জরিপ ২০২২ অনুযায়ী ৫১ দশমিক ৭৯ শতাংশ হলো ছেলে শিশু এবং বাকি ৪৮ দশমিক ২১ শতাংশ। এর মধ্যে ২৭ লাখ ৩৪ হাজার ৪৪ ছেলে শিশু এবং ৮ লাখ ২ হাজার ৮৮৩ মেয়ে শিশু রয়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব মো. এহছানে এলাহী, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন, ব্রিটিশ হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার এবং ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর মাটি ক্যানেল এবং আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর তুওমো পাউটিয়াইনেন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব বলেন, জনসংখ্যা বাড়ার কারণে শিশুশ্রম কিছুটা বেড়েছে, আমাদের ঝুঁকিপূর্ণ শিশুর সংখ্যা কমেছে। আমাদের আগামী দুই বছর সামনে রয়েছে। শিশুশ্রম নিরসনে আমরা ২৫০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এখানে শুধু শ্রম মন্ত্রণালয় নয়, সব নিয়ে কাজ করে শিশু শ্রম নিরসন হবে বলে তিনি মনে করেন।
জাতীয় শিশুশ্রম জরিপের উদ্দেশ্য ছিল শ্রমজীবী শিশুর সংখ্যা, শিশুশ্রম এবং ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমে নিয়োজিত শিশুর সংখ্যা চিহ্নিত করা, বিভিন্ন সেক্টর, লিঙ্গ, অবস্থান এবং শিশু জনগোষ্ঠীর তথ্য সংগ্রহ করা। এছাড়া শিশু জনতা যার শিক্ষা অর্জনের অবস্থান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০২৩
এসএমএকে/এএটি