ঢাকা: ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় ঢাকায় পশ্চিমা মিশনগুলো যে বিবৃতি দিয়েছে, তাতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ হলেই একটা মগের মুল্লুক পাইছে ওরা, এটা গ্রহণযোগ্য নয়।
বুধবার (১৯ জুলাই) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় বিদেশি মিশনগুলোর বিবৃতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বিবৃতির বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, এটার সম্পর্কে আমি জানি না। একটি দেশ সম্পর্কে আমি বলতে চাই, আমেরিকার নিউইয়র্কে যখন-তখন লোক মেরে ফেলা হয়। তারা কী স্টেটমেন্ট দেয় কখনও? জাতিসংঘ কখনও বলেছে, আমেরিকাতে লোক মরে যায় কেন?
যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শিক্ষার্থী সাইদ ফয়সাল ওরফে আরিফের প্রসঙ্গ টেনে ড. মোমেন বলেন, একটা বাঙালি ছেলে মারা গেল… এত দিন হলো জাতিসংঘ কখনও বলেছে, ওই ছেলের তদন্ত কতদূর হয়েছে? কিংবা রাষ্ট্রদূতরা দলবেঁধে কোনো বিবৃতি দিয়েছেন?
সাংবাদিকদের উদ্দেশে করে ড. মোমেন বলেন, আপনারা তাদের কেন জিজ্ঞাসা করেন না? প্রতিদিন লোক মারা যায় তখন তারা কোনো স্টেটমেন্ট দেয় না। আর বাংলাদেশ হলেই একটা মগের মুল্লুক পেয়েছে, এটা গ্রহণযোগ্য নয়। আপনাদের সঙ্গে তাদের (বিদেশি দূতদের) যখন-তখন সাক্ষাৎ হয়। আপনারা তাদের জিজ্ঞাসা করেন না কেন, বাঙালি ছেলে মেরে ফেলল। আমেরিকায় তো যখন-তখন লোক মারা যায়।
প্রশ্ন করা সাংবাদিকের প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে তিনি বলেন, এগুলো নিয়ে আপনি প্রশ্ন করেছেন কখনও? করেছেন? ফয়সালের কথা প্রশ্ন করেছেন? কেন করেননি? আপনাদেরও এসব বিষয়ে সজাগ হওয়া উচিত। খালি আমার দেশ হলে হইচই করা শুরু করে দেয়। আর কোথাও হলে এ ধরনের হয়?
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাকে একটা প্রতিবেদন দেন কোন কোন দেশে তারা (বিদেশিরা) এ ধরনের বিবৃতি দিয়েছে ওখানে লোক মারার পরে। কিছু দিন আগে ফ্রান্সে কতগুলো লোক আক্রান্ত হলো, কেউ কী দলবেঁধে বিবৃতি দিয়েছে? খালি বাংলাদেশ হলেই দেয়। এখন সময় এসেছে এসব প্রচার বন্ধ করার। তারা আমাদের কাছে বিবৃতি না দিয়ে আপনাদের কাছে দেয়। এটা গ্রহণযোগ্য নয়।
হিরো আলমের ওপর হামলায় ঘটনায় মোমেন বলেন, কারা মারল এটা তদন্ত করে দেখতে হবে। কে মারিয়েছে… এমনতো হতে পারে কেউ কেউ এটাতে যুক্ত ছিল। একটা অস্থিতিশীলতা তৈরি করার জন্য হয়তো কেউ আমাদের আগামী নির্বাচন চায় না। নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য এ ধরনের কর্মকাণ্ড শুরু করে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় বুধবার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ঢাকার ১৩ দেশের দূতাবাস ও হাইকমিশন। এর আগে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। নিন্দা জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০২৩
টিআর/এএটি