ঢাকা: ক্ষমতার অপব্যবহার, ঘুষ গ্রহণ ও দুর্নীতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক ও উপ-সহকারী পরিচালক পদমর্যাদার দুই কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর সই করা পৃথক দুটি আদেশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন- সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান ও উপ-সহকারী পরিচালক সুদীপ কুমার চৌধুরী।
দুদকের অফিস আদেশে জানানো হয়, সুদীপ কুমার চৌধুরী বগুড়ায় উপ-সহকারী পরিচালক থাকাকালীন বগুড়া পুলিশ লাইনসের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আলমগীর হোসেনের সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আশ্বাস দেন। বিনিময়ে তার কাছ থেকে ও তার আত্মীয়ের কাছ থেকে উৎকোচ নেন।
উৎকোচ দাবি ও গ্রহণের কথোপকথনের অডিও রেকর্ড দুদকের ফরেনসিক ল্যাব বিশেষজ্ঞদের মতামতে প্রমাণ পাওয়া যায়। একইসঙ্গে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা সাক্ষীদের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ না করার জন্য নির্দেশনা যথাযথ প্রতিপালন না করে দুদকের আদেশ অমান্য করার অভিযোগ প্রমাণিত হয়।
সুদীপ কুমার কমিশনের বৈধ আদেশ অমান্য করে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে দুদকের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন করেছেন বলে অফিস আদেশে মন্তব্য করেছে দুদক।
এ ঘটনায় সুদীপ কুমার চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালা, ২০০৮ এর ৩৯(খ), ৩৯(ঙ) ও ৩৯(চ) বিধি অনুযায়ী যথাক্রমে ‘অসদাচরণ’, ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ ও ‘দুর্নীতি’ এর অভিযোগে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়। ফলে বিধিমালার ৪৩(১) বিধি অনুযায়ী তাকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে তিনি প্রচলিত বিধি অনুযায়ী খোরাকি ভাতা পাবেন বলে অফিস আদেশে জানানো হয়।
দুদকের আরেকটি অফিস আদেশে বলা হয়, মো. মোস্তাফিজুর রহমান পাবনায় উপ-সহকারী পরিচালক থাকাকালীন তার অফিস কক্ষে সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি থানার চরচালা গ্রামের মৃত শমসের আলীর ছেলে মো. সামছুল হকের কাছ ২০ লাখ টাকা দাবি করেন। আর তার কাছ থেকে ৭৬ হাজার টাকা নেন। চলতি বছরের ২৬ জুন একটি ভিডিও ফুটেজ দুটি টিভি চ্যানেলের সংবাদে প্রচারিত হয়। প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, মেসার্স হক টেক্সটাইল লিমিটেডের মালিক মো. শামসুল হকের কাছ থেকে তিনি ঘুষ নিয়েছেন। তাই পাবনার দুদকের উপ-পরিচালক তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া অনুরোধ জানান।
তার বিরুদ্ধে যথাযথভাবে সরকারি দায়িত্ব পালন না করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ নিয়ে চাকরি শৃঙ্খলা-পরিপন্থী কাজ করার অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। তাই বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালা, ২০০৮ এর ৩৯(খ) ও ৩৯(ঙ) বিধি মোতাবেক যথাক্রমে ‘অসদাচরণ’ ও ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ অভিযোগে বিভাগীয় মামলা (নম্বর ০৮/২০২৩) দায়ের করা হয়। ওই বিধিমালার ৪৩(১) বিধি অনুযায়ী তাকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে তিনি প্রচলিত বিধি অনুযায়ী খোরাকি ভাতা পাবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১২ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০২৩
এসএমএকে/আরএইচ