পবিত্র কোরআনসহ মুসলমানদের ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত হানার প্রতিবাদে জাতিসংঘের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশের দূত।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে সংস্থাটির মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে তার কার্যালয়ে ইসলামিক দেশগুলোর সংগঠন ওআইসির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে সাক্ষাৎকালে এ নিন্দা জানান জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের পবিত্র মূল্যবোধকে অবমাননা করে কিছু দেশে প্রকাশ্যে পবিত্র কোরআনের কপি পোড়ানোর ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা জানাই।
বাংলাদেশের নেতৃত্বে বৈঠকে ওআইসির সদস্য রাষ্ট্রের মধ্য থেকে মিশর, সৌদি আরব, মৌরিতানিয়া ও পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত পর্যায়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
শুক্রবার (২১ জুলাই) জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন এ তথ্য জানায়।
এ সময় ওআইসির পক্ষ থেকে রাষ্ট্রদূত মুহিত জাতিসংঘ মহাসচিবকে বলেন, পবিত্র কোরআন পোড়ানোর এই ঘৃণ্য কাজটি শুধু বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিকেই গভীরভাবে আঘাত করেনি, বরং এটি মত প্রকাশের স্বাধীনতা, ধর্মীয় সহনশীলতা এবং ব্যক্তি বিশ্বাসের নীতিরও পরিপন্থী।
তিনি আরও বলেন, এ ধরনের ধর্মীয় বিদ্বেষের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তা সহিংসতার জন্ম দিতে পারে। বিভিন্ন দেশে শান্তি ও নিরাপত্তাকে অস্থিতিশীল করতে পারে।
এই প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রদূত মুহিত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমদের কথা তুলে ধরেন, যারা ধর্মীয় ও জাতিগত বিদ্বেষের স্বীকার হয়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।
রাষ্ট্রদূত মুহিত জাতিসংঘ মহাসচিবকে ইসলামফোবিয়া, বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য এবং পবিত্র কোরআন ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতীক অবমাননাসহ সব ধরনের ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা মোকাবিলায় জাতীয় পর্যায়ে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নিতে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে অনুরোধ করার আহ্বান জানান।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ওআইসি সদস্যদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন। তিনি ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক এই জঘন্য ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানান।
আন্তোনিও গুতেরেস ওআইসি প্রতিনিধিদের আশ্বস্ত করেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের ধর্মবিরোধী ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে বিশ্বব্যাপী চলমান প্রচেষ্টাকে জোরালোভাবে সমর্থন করতে তিনি তার অবস্থান থেকে যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাবেন।
এর আগে গত ১৪ জুলাই রাষ্ট্রদূত মুহিতের নেতৃত্বে ওআইসির প্রতিনিধিরা সাধারণ পরিষদের সভাপতি সাবা কোরোসি এবং ২০ জুলাই নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্রদূত ডেম বারবারা উডওয়ার্ডের সঙ্গে দেখা করেন। এই বৈঠকে তারা একই ধরণের উদ্বেগ ও নিন্দা জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৮ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০২৩
টিআর/এমএইচএস