ঢাকা, বুধবার, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দেলোয়ার হত্যার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুই আসামি গ্রেপ্তার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০২৩
দেলোয়ার হত্যার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুই  আসামি গ্রেপ্তার সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার মো. মোর্শেদ আলম ও বামে গ্রেপ্তার দুই ছিনতাইকারী।

ঢাকা: রাজধানীর উত্তরায় ছিনতাইকারীর এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে দেলোয়ার হোসেন হত্যার ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।  গ্রেপ্তার ছিনতাইকারীরা হলেন, মো. রফিক (৩৮) ও নাসির (২০)।

এ ঘটনার মূলহোতা ছিলেন রফিক এবং সহযোগী ছিলেন নাসির।

রোববার (১ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর উত্তরা ডিসি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. মোর্শেদ আলম।

সংবাদ সম্মেলনে ডিসি মোর্শেদ আলম বলেন, এ ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি হত্যা মামলা (নং- ৪৪) দায়ের করে নিহত দেলোয়ারের পরিবার। পরে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ও অপরাধ সংশ্লিষ্ট এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনার মাধ্যমে হত্যাকারীদের শনাক্ত করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা রফিককে দক্ষিণখানের একটি বস্তি থেকে ও নাসিরকে মিরপুরের পুরাতন কচুক্ষেত সংলগ্ন সাগরিকা বস্তি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিসি বলেন, ২৭ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৩টার দিকে দেলোয়ারের মা-বাবা ও ভাইসহ বাসার আসবাবপত্র নিয়ে ডেমরা থেকে একটি পিকআপভ্যানে করে ময়মনসিংহের দিকে যাচ্ছিলেন। ওই গাড়ির ড্রাইভারের পাশে বাবা-মা এবং পেছনে দেলোয়ার ও তার ভাই বসা ছিলেন। রাত তিনটার পর উত্তরার বিএনএস সেন্টারের পাশে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উড়াল সেতুর পাশে পৌঁছায়। সেখানে একটু জ্যামের মধ্যে হঠাৎ করে একজন ছিনতাইকারী তার পকেটে থাকা মোবাইল ও কিছু টাকা নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তখন দেলোয়ার ও তার ভাই দৌড়ে গিয়ে ছিনতাইকারীকে জাপটে ধরেন। এ সময় আরও দুই ছিনতাইকারী এসে দেলোয়ার ও আনোয়ারের সঙ্গে তিন ছিনতাইকারী ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে ছিনতাইকারীরা দেলোয়ারের বুকে এবং তার ভাইয়ের পায়ে ছুরিকাঘাত করেন। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক দেলোয়ারকে মৃত ঘোষণা করেন।

ডিসি মোর্শেদ বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনার পরপরই কিছু আলামত সংগ্রহ করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে ছিনতাইকারীদের একটি মোবাইলফোন পাওয়া যায়। সেই আলামতের ভিত্তিতে ও ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার রফিকই মূলত এ হত্যাকাণ্ড ঘটান। এ সময় তার সহযোগী ছিলেন নাসির। তারা দুইজনই দীর্ঘদিনের বন্ধু এবং একইসঙ্গে মাদক সেবন ও মাদকের কারবার করতেন। জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানিয়েছেন, তারা দীর্ঘ ১০/১২ বছর ধরে রাজধানীর উত্তরা, এয়ারপোর্ট, আবদুল্লাহপুর, কুড়িল বিশ্বরোডসহ বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই করতেন। আসামি রফিকের নামে বিভিন্ন থানায় তিনটি মাদক মামলা রয়েছে এবং নাসিরের নামে একটি মাদক মামলার থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

ডিসি মোর্শেদ আলম আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের সময় তিনজন ছিনতাইকারী অংশ নিয়েছিলেন। মোবাইল ছিনতাই করেছিলেন রফিক। দেলোয়ার যখন রফিককে জড়িয়ে ধরলেন, তখনই রফিক তাকে ছুরিকাঘাত করেন। রফিকের সহযোগী হিসেবে আর দুই ছিনতাইকারী ছিল। তিনজনে মিলেই হত্যাকাণ্ড ঘটায়।

বিমানবন্দর থেকে আব্দুল্লাহপুর মহাসড়কে প্রতিনিয়ত ছিনতাই হওয়ার কারণ কী? এমন প্রশ্নের জবাবে ডিসি মোর্শেদ বলেন, বিমানবন্দর থেকে আব্দুল্লাহপুর সড়কে এক্সপ্রেসওয় ও রাস্তার বিভিন্ন উন্নয়নের কাজ চলছে। যেহেতু গাড়ির গতি এখানে অনেক কম থাকে, এর কারণে প্রতিনিয়তই অনেক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে রমজান মাসে অনেক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ওইসময় আমাদের ছিনতাই প্রতিরোধে বিশেষ টিম থাকে। এছাড়া প্রতি মাসে ১০০/২০০ ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়। কিন্তু ছিনতাইয়ের অপরাধে ধরা পড়লেও আসামিরা জামিনে বের হয়ে পুনরায় এ অপরাধে যুক্ত হচ্ছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০২৩
এসজেএ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।