ঢাকা: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সুনীল অর্থনীতি বাস্তবায়ন ও ফলপ্রসূ করার লক্ষ্যে দেশীয় মেরিটাইম অর্গানাইজেশনগুলো বিশ্বমানে উন্নীত করার লক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে কার্যক্রম অব্যাহত আছে। এ ধারা চলমান থাকলে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ উন্নত দেশের কাতারে শামিল হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল একটি সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা। এরই ধারাবাহিকতায় সরকারের গৃহীত ডেল্টা প্ল্যান-২১০০, প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০৪১ ও সুনীল অর্থনীতির সফল বাস্তবায়ন এবং মেরিটাইম সেক্টরের উন্নতির মধ্যে বর্তমান ও আগামী শতকের সুখী ও সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশ গঠনের মূলমন্ত্র নিহিত। দেশের মোট বাণিজ্যের শতকরা ৯০ শতাংশের বেশি সমুদ্রপথে পরিচালিত হয়। সমুদ্রগামী জাহাজে দেশের সিফেয়ারারদের বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ কাজে লাগাতে দক্ষ সামুদ্রিক জনশক্তি তৈরির বিকল্প নেই।
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) রংপুরে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি, রংপুর এবং বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি, পাবনা এর ‘২য় ব্যাচ ক্যাডেটদের গ্র্যাজুয়েশন প্যারেড’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি, রংপুর এর কমান্ড্যান্ট ক্যাপ্টেন মো. শফিকুল ইসলাম সরকার এবং বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি, পাবনার কমান্ড্যান্ট (ভারপ্রাপ্ত) ক্যাপ্টেন মো. তৌফিকুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে ক্যাডেটদের সালাম গ্রহণ, কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও পুরস্কার বিতরণ করেন প্রতিমন্ত্রী।
দু’বছর মেয়াদি এ শিক্ষা কোর্সে দুটি মেরিন একাডেমির ১৩২ জন অংশ নেয়। এর মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি, রংপুর এর ৬৫ জন এবং বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি, পাবনা এর ৬৭ জন।
রংপুর মেরিন একাডেমির ‘কমান্ড্যান্ট গোল্ড মেডেল’ পেয়েছেন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মো. আরাফ ফেরদৌস আপন। ‘কমান্ড্যান্ট সিলভার মেডেল’ পেয়েছেন দুজন। একটি পেয়েছেন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মো. সাখাওয়াত হোসেন সৈকত। আরেকটি পেয়েছেন নটিক্যাল বিভাগের শেখ আব্দুল্লাহেল শুভ। পাবনা মেরিন একাডেমির ‘কমান্ড্যান্ট গোল্ড মেডেল’ পেয়েছেন ইমতিয়াজ আহমেদ পরশ। ‘কমান্ড্যান্ট সিলভার মেডেল’ পেয়েছেন দুজন। একটি পেয়েছেন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সুজন ইসলাম, আরেকটি পেয়েছেন নটিক্যাল বিভাগের সাফি বিন আমির।
প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ বলেন, মেরিন সেক্টরে আমাদের দক্ষ জনবল রয়েছে। এ দক্ষতাকে আরও শক্তিশালী ও বেগবান করতে প্রয়োজন অব্যাহত কঠোর অনুশীলন এবং প্রশিক্ষণ। প্রচলিত প্রশিক্ষণকে বিশ্বমানে উন্নীত করার লক্ষ্যেই প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর প্রবর্তিত ডেভেলপমেন্ট অব মেরিন একাডেমি ১৯৭৩’ শীর্ষক প্রকল্প এবং টেরিটোরিয়াল ওয়াটার অ্যান্ড মেরিটাইম জোনস অ্যাক্ট, ১৯৭৪’ বাস্তবায়ন এবং সমুদ্র বিজয়ের পর বিশাল সমুদ্ররাশির সংরক্ষণ, সুনীল অর্থনীতির সুফল অর্জনের জন্য দক্ষ সামুদ্রিক জনশক্তি তৈরির লক্ষ্যে দেশের প্রতিটি বিভাগে একটি করে মেরিন একাডেমি প্রতিষ্ঠিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তার ফলে ইতোমধ্যে ২০২১ সাল থেকে রংপুর, পাবনা, বরিশাল ও সিলেটে আরও চারটি নতুন মেরিন একাডেমির কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০১৩ সালে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশের মেরিন একাডেমিগুলোকে বিশ্বের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অংশীদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে উন্নীত করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। ফলশ্রুতিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মেরিন একাডেমিগুলোর গ্রহণযোগ্যতা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বেড়েছে এবং বিশ্বের চাহিদা অনুযায়ী ক্যাডেটরা শুধু প্রশিক্ষিতই হবে না, দেশে-বিদেশে তাদের ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগে দেশে বেকার সমস্যা দূর হবে। আমাদের নতুন মেরিন একাডেমিগুলোর জন্য অত্যাধুনিক সিমুলেটর সংগ্রহ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ায় সবার সম্মিলিত প্রয়াসের প্রতি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২৩
এমআইএইচ/আরআইএস