বরিশাল: দুই থানার মাঝে দুইশত কিলোমিটারের বেশি দূরত্ব। তারপরও শুধু ৩ কেজি গাঁজার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থানাধীন গঙ্গানগর এলাকা থেকে বরিশালে এসেছেন কাওছার (৪০)।
রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেলের পরিদর্শক মো.মুনির জানান, ভোরে নগরের বৈদ্যপাড়া এলাকায় অভিযান চালায় কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক শফিকুল ইসলামসহ সঙ্গীয় ফোর্স।
অভিযানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা থানাধীন গঙ্গানগর এলাকার শহিদ মিয়ার ছেলে কাওছার (৪০) তিন কেজি গাঁজাসহ গ্রেপ্তার হন।
অভিযানিক দলের সঙ্গে থাকা সহকারী উপ-পরিদর্শক জামাল হোসেন জানান, প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্যানুযায়ী ওই মাদকদ্রব্য নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকেই সড়কপথে বরিশালে আসে কাওসার। তবে সে এখানে কার কাছে এসেছিল তা জানা যায়নি এখনো।
এদিকে একইদিন একইভাবে দুইশত কিলোমিটারের বেশি পথ পাড়ি দিয়ে বরিশালে এসে ৪ কেজি গাঁজাসহ আটক হয়েছেন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানাধীন সোনাকাটিয়া এলাকার আনা মিয়ার ছেলে মিজান (৪০)।
অভিযানিক দলের সঙ্গে থাকা এয়ারপোর্ট থানার এসআই মেহেদী হাসান জানান, বরিশাল নগরের গড়িয়ার পাড় গোল চত্বর সংলগ্ন এলাকা থেকে মিজানকে ৪ কেজি গাঁজাসহ আটক করা হয়।
এ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন বলেন, নিয়মানুযায়ী আটকদের বিরুদ্ধে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে এবং আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালতে মিজানকে কারাগারে পাঠিয়েছে।
এদিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া কিংবা নোয়াখালী থেকে সম্প্রতি কিছু ব্যক্তি মাদকসহ তাদের হাতে ধরা পড়ছে। আটকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, মাদক কারবারির সঙ্গে জড়িত এসব ব্যক্তিরা দুইদিক থেকে বরিশালে আসেন। কেউ নদী পথে লক্ষ্মীপুর হয়ে কেউ আসছেন বরিশালে আবার কেউ ঢাকা হয়ে সড়কপথে মাদক নিয়ে বরিশালে আসছেন।
তবে লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো- এদের সবার কাছে নতুন বাটন মোবাইল থাকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, ফলে তাৎক্ষণিক সন্ধান পাওয়া যায় না এসব মাদক নিয়ে তারা দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে কার কাছে আসছেন। আবার যার কাছে আসছেন তাকে ধরলেও দেখা যাচ্ছে তিনিও অন্য কারও কাছে পৌঁছে দেবেন এ মাদক। অর্থাৎ বহনকারীদের মধ্যে বেশিরভাগই ক্যারিয়ার হিসেবে কাজ করে এবং এরা তেমনভাবে সচ্ছল পরিবারেরও কেউ নন। সেক্ষেত্রে উভয় প্রান্তের মূল কারবারি খুঁজে পাওয়াটা কিছুটা কঠিন হয়ে পড়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য।
অপরদিকে মাদকসহ আটকের পর মামলা করার পর, সে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হলে একটি চক্র আইনজীবী নিয়োগ করে তাদের (কুমিল্লা, ব্রাহ্মণ বাড়িয়া কিংবা নোয়াখালীর বাসিন্দাদের) জামিন করিয়ে নিতেও মরিয়া হয়ে ওঠেন।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত উপ–পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মো. ফজলুল করিম বলেন, মাঝপথে যারা মাদক বহন করছেন তারা ধরা পড়ার পর থেকেই বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সেক্ষেত্রে ওই সময়ে না হলেও মামলাটির তদন্ত করতে গিয়ে মাদক কার কাছে আসছিল বা যাচ্ছিল তা আমরা জানতে পারছি। তখন তাদেরও আইনের আওতায় আনা হয়, আবার অনেক সময় তো আটকদের তথ্যেও অনেককে আইনের আওতায় তাৎক্ষণিক আনা হচ্ছে।
তিনি বলেন, পুলিশ কমিশনার জিহাদুল কবির মহোদয়ের নির্দেশে মাদক বিরোধী অভিযান সব সময় জোরদার রয়েছে। যার ধারবাহিকতায় মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত সবাই আইনের আওতায় আসছে এবং পরিমাণে বেশি মাদকও উদ্ধার হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৪
এমএস/জেএইচ