ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ পৌষ ১৪৩১, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে ১০ দেশের সঙ্গে আইনি চুক্তি হবে: প্রধানমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৪
পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে ১০ দেশের সঙ্গে আইনি চুক্তি হবে: প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পুরোনো ছবি

ঢাকা: দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় তথ্য, সাক্ষ্য-প্রমাণ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা নিতে ১০ দেশের সঙ্গে আইনি সহায়তা চুক্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শিগগির মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে বলেও উল্লেখ করেছেন সরকার প্রধান।

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বিরোধী দলের চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নুর এক প্রশ্নের লিখিত প্রশ্নের উত্তরে সরকার প্রধান এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থপাচার রোধে বর্তমানে বাংলাদেশে ‘মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২’ বলবৎ রয়েছে যা সর্বশেষ ২০১৫ সালের ২৬ নভেম্বর সংশোধিত হয়। এই আইনের বিধান অনুসারে বৈধ বা অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ বা সম্পত্তি নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিদেশে পাচারকে মানিলন্ডারিং অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মানিলন্ডারিং অপরাধের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৪(চার) বছর ও সর্বোচ্চ ১২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং এর অতিরিক্ত অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তকরণ ও সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির দ্বিগুণ মূল্যের সমপরিমাণ বা ১০ লাখ টাকা (এর মধ্যে যা অধিক) অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বিদেশে পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনা সহজীকরণে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে পারস্পরিক আইনি সহযোগিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অপরাধ সম্পর্কিত বিষয়ে ‘পারস্পরিক সহায়তা আইন, ২০১২’ জারি করা হয়েছে। এই আইনের আওতায় অপরাধ সম্পর্কিত বিষয়ে পারস্পরিক সহায়তা প্রদানকল্পে কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ (Central Authority) হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে।

এছাড়া, অ্যাটর্নি জেনারেলের নেতৃত্বে বিদেশে পাচারকৃত সম্পদ বাংলাদেশে ফেরত আনার বিষয়ে গঠিত টাস্কফোর্স পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় তথ্য, সাক্ষ্য-প্রমাণ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা গ্রহণের জন্য প্রাথমিকভাবে দশটি দেশের সাথে পারস্পরিক আইনগত সহায়তা চুক্তি Mutual Legal Assistance (MLA) Treaty/Agreement স্বাক্ষরের বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারের বিষয়ে একটি কৌশলপত্র প্রণয়ন করা হয়েছে, যা মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধে গঠিত জাতীয় সমন্বয় কমিটি কর্তৃক অনুমোদনের পর উক্ত কৌশলপত্রের সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থায় পাঠানো হয়েছে। এতদ্ব্যতীত, পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারের বিষয়ে বিএফআইইউ কর্তৃক একটি গাইডলাইন্স প্রণয়ন করা হয়েছে, যা জাতীয় সমন্বয় কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে।

অধিবেশনে মূল্যস্ফীতির নিয়ন্ত্রণ নিয়েও কথা বলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দ্রুতই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নসহ গুরুত্বপূর্ণ অর্থনীতিসমূহে ২০২৪ সালে মূল্যস্ফীতি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে আসবে বলে পূর্বাভাস রয়েছে। এ অবস্থায়, বিশ্ববাজারে জ্বালানি, খাদ্য পণ্য ও সারের মূল্য কমে আসা, দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় এবং খাদ্য সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য সরকারি উদ্যোগের প্রভাবে শিগগির মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে বলে আশা করা যায়। পরিশেষে বলা যায়, সামষ্টিক অর্থনীতিতে নানা চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে একটি দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে অবস্থান। বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৪
এসকে/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।