ঢাকা, শনিবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দিনাজপুরে স্ত্রী-মেয়েকে হত্যা, ঘাতক বাবা গ্রেপ্তার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২৪
দিনাজপুরে স্ত্রী-মেয়েকে হত্যা, ঘাতক বাবা গ্রেপ্তার

দিনাজপুর: সন্তানদেরকে গালিগালাজকে কেন্দ্র করে স্বামী-স্ত্রীর কথা কাটাকাটি। পরে ক্ষোভ থেকে স্ত্রী ও এক সন্তানকে হত্যা করেছেন স্বামী।

এ ঘটনায় গুরুতর আহতাবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে অপর এক সন্তান। হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে ঘাতক স্বামী শহীদুল ইসলামকে (৩৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।  

রোববার (২১ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে দিনাজপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার (এসপি) শাহ্ ইফতেখার আহমেদ।

এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মমিনুল করিম, ডিএসবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সিফাত-ই রব্বান, দিনাজপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিন্নাহ-আল মামুন, বিরামপুর সার্কেল এএসপি মঞ্জুরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

গ্রেপ্তার হওয়া শহীদুল ইসলাম নবাবগঞ্জ উপজেলার হেয়াতপুর চিনিরচড়া গ্রামের সোহরাব আলীর ছেলে। এ ঘটনায় নিহত হয়েছেন তার স্ত্রী মর্জিনা বেগম (৩০), তার মেয়ে আফরিন (৫)। আর গুরুতর আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে ভর্তি আছে অপর সন্তান আলামিন (২১)।  

এই হত্যার ঘটনা স্বীকার করায় শহীদুল ইসলামের বিরুদ্ধে পেনাল কোড-৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩০২/৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করে আদালতে পাঠানো কথা জানান এসপি।  
এসপি শাহ্ ইফতেখার আহমেদ জানান, শহীদুল ইসলাম পেশায় কাঠুরিয়া। প্রতিদিনের মতো গতকাল শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ৮টায় তিনি কাঠ কাটার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান এবং সন্ধ্যার আগে বাড়িতে ফেরেন। বাড়িতে এসে মুড়ি ও মিষ্টি খেয়ে দাউদপুর বাজারের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে মর্জিনা বেগম তার সন্তানদ্বয়ের মোবাইলে গান শোনা নিয়ে বিরক্ত হয়ে গালিগালাজ করতে থাকলে শহীদুল ইসলাম বাধা নিষেধ করেন। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে বাশের মোটা লাঠি হাতে নিয়ে মর্জিনা বেগমের মাথার পেছন দিকে সজোরে আঘাত করেন। এতে মর্জিনা বেগম মাটিতে পড়ে গেলে সন্তানরা এগিয়ে আসে। এ সময় ওই বাশের লাঠি দিয়ে প্রথমে তার ছয় বছরের মেয়ে আফরিন জান্নাতের মাথায় আঘাত করে এবং পরে ১১ বছর বয়সী ছেলে আল-আমিনের মাথায় সজোরে আঘাত করে। পরে তারা রক্তাক্ত জখম হয়ে আঙ্গিনায় পড়ে গেলে শহীদুল ইসলাম তার ব্যবহৃত বাইসাইকেল নিয়ে দাউদপুর বাজারে চলে যায়।  

পরে রাত ৯টার দিকে আসামি শহীদুল ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য বাড়িতে এসে তার স্ত্রী ও সন্তানদের কে বা কারা গুরুতর রক্তাক্ত জখম করেছে মর্মে ডাক-চিৎকার করতে থাকেন। পরে এলাকাবাসী এসে স্ত্রী মর্জিানা বেগমকে মৃত অবস্থায় পায় এবং দুই সন্তানকে গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে তাদের রাতেই রমেক হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মেয়ে আফরিন জান্নাতের মৃত্যু হয়।  

এ ঘটনায় পুলিশ রাতেই শহীদুল ইসলামের সঙ্গে কথা বললে তার কথার অসংলগ্নতা পেয়ে তাকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক সময় শহীদুল স্ত্রী ও সন্তানকে আঘাতের বিষয়টি স্বীকার করলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।  

** নবাবগঞ্জে দুর্বৃত্তদের হামলা: মায়ের পর মেয়ের মৃত্যু
** নবাবগঞ্জে দুর্বৃত্তদের হামলায় মা নিহত, দুই সন্তান আহত

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২৪
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।