ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ মে ২০২৪, ০০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

মালয়েশিয়ার দুয়ার বন্ধ, চলতি বছর বৈদেশিক কর্মসংস্থান নিম্নমুখী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২৪
মালয়েশিয়ার দুয়ার বন্ধ, চলতি বছর বৈদেশিক কর্মসংস্থান নিম্নমুখী

পরপর দুই বছর বাড়লেও চলতি বছরে প্রথম তিন মাসে কিছুটা কমেছে বৈধপথে বিদেশে কর্মসংস্থান। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর এক হালনাগাদ রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে।

 

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ তিন মাসে কাজ নিয়ে দেশের বাইরে গিয়েছেন দুই লাখ ৩৬ হাজার ৮৩৭ জন। অর্থাৎ তিন মাসের গড়ে দেশের বাইরে গিয়েছেন ৭৮ হাজার ৯৪৫ জন। আগের বছর ২০২৩ সালে বৈধপথে কাজ নিয়ে বিদেশ গিয়েছেন ১৩ লাখ ৫ হাজার ৪৫৩ জন। এ বছর প্রতিমাসে দেশের বাইরে গিয়েছে ১ লাখ ৮ হাজার ৭৮৭ জন। তার আগের বছর ২০২২ সালের প্রতি মাসে বিদেশে গিয়েছেন ৯৪ হাজার ৬৫৬ জন।

গত দুই বছর বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি মানুষ চাকরি নিয়ে দেশের বাইরে গিয়েছেন। আগের বছর ২০২১ সালে গিয়েছেন ৬ লাখ ১৭ হাজার ২০৭ জন। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরর তথ্য বিশ্লেষণ করলে এমন তথ্য পাওয়া যায়।

তিন মাসের শ্রমশক্তি রপ্তানি কমে যাওয়ার বিষয়টি অস্বাভাবিক মনে করছে না এ খাতের উদ্যোক্তারা। বছরের শেষের দিকে জনশক্তি রপ্তানি বাড়বে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন্স অব রিক্রুটমেন্ট এজেন্সিজের (বায়রা) সভাপতি মো. আবুল বাশার। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশের প্রধান শ্রমবাজার সৌদি আরব। সৌদি আরবসহ কিছু দেশ বাংলাদেশের শ্রমিকদের তুলনামূলক কম বেতন দেয়। বাংলাদেশি শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর জন্য জনশক্তি আমদানিকারক দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে। এ সময় একেবারে কম বেতন দেওয়া হয়-এমন দেশে মানুষ কম পাঠানো হচ্ছে। এ কারণে বিদেশে কর্মসংস্থান গত দুই বছর যে হারে হয়েছে, এবার সেই হারটা নেই। চলতি বছরের শেষের দিকে এ সমস্যা সমাধান হবে।

মালয়েশিয়ায় লোক যাওয়া বন্ধ আছে। গত বছরের চেয়ে এবছরের প্রথম তিন মাসে বিদেশে মানুষ যাওয়ার গতি কমার একটিও অন্যতম কারণ বলে উল্লেখ করেন বায়রা সভাপতি।

এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রধান শ্রমবাজার সৌদি আরব। এবং সৌদি আরবে মূলত অদক্ষ লোকজনই বেশি যায়। সৌদি আরবে জনশক্তি রপ্তানি কমলে মোট জনশক্তি রপ্তানিতে ধাক্কা লাগে। অন্য দেশে মানুষ কাজের সন্ধানে গেলেও তা পূরণ হয় না। যদিও এবারের চিত্র ভিন্ন। বছরের প্রথম তিন মাসে জনশক্তি রপ্তানি কিছুটা কমেছে মূলত বাংলাদেশিরা কম যায় এমন কয়েকটি দেশে লোক কম যাওয়ার কারণে।  

তথ্য বলছে, ব্রুনাইয়ে যেখানে গত দুই বছরে এক হাজার থেকে এক হাজার ৮০০ জনবল রপ্তানি হয়েছিল, এবার জনশক্তি রপ্তানি শুরুই হয়নি। গত দুই বছর মৌরিতানিয়াতে যথাক্রমে সাড়ে পাঁচ হাজার ও ১২০০ জনবল রপ্তানি হয়েছিল, এবার তিন মাসে সেখানে কোনো জনশক্তিই রপ্তানি হয়নি। জনশক্তি রপ্তানি কমেছে যুক্তরাজ্য, ইতালি ও দক্ষিণ কোরিয়াতেও। ওমানে গত বছর যেখানে এক লাখ ২৮ হাজার মানুষ গিয়েছে, এ বছর তিন মাসে গিয়েছে মাত্র ৩০০ জন। আর এ সব কারণেই জনশক্তি রপ্তানির গতি কিছুটা কমেছে।

জানুয়ারি-মার্চ সৌদি আরবে মোট জনশক্তি রপ্তানি হয়েছে এক লাখ ৩৫ হাজার ৪৩৫ জন। যা তিন মাসে মোট জনশক্তি রপ্তানির ৫৭ শতাংশ। একই সময়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২২ হাজার ৭৬০জন বা ৯ দশমিক ৬১ শতাংশ। দেশটি বাংলাদেশ থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জনশক্তি রপ্তানিকারক দেশ। তথ্য বলছে দেশ দুটিতে চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ তিন মাসে জনশক্তি রপ্তানি কমেনি।  

বাংলাদেশ সময়: ১০২২ ঘণ্টা,এপ্রিল ২৭,২০২৪
জেডএ/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।