ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

আটকে রেখে মারধর করে দরপত্র জমা দিতে বাধা দিলেন যুবলীগ নেতা! 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০২৪
আটকে রেখে মারধর করে দরপত্র জমা দিতে বাধা দিলেন যুবলীগ নেতা! 

ফেনী: ফেনীতে দরপত্র জমাদানে বাধা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে সেন্টু মিয়া নামে এক যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমান-ফারহান ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপক আলী আক্কাস প্রকাশ আজাদ এ ব্যাপারে ফেনী মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

 

এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট দরপত্রটি বাতিল করে নতুন দরপত্র আহ্বান করা হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক বিভাগ। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মহিপাল সড়ক ভবনের নিচতলায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় মারধরের শিকার আলী আক্কাস নোয়াখালী কোম্পানীগঞ্জ দক্ষিণ মুসাপুরের মো. হানিফের ছেলে। বর্তমানে তিনি শহরের পোস্ট অফিস রোডে বসবাস করছেন।

অভিযুক্ত সেন্টু মিয়া সোনাগাজী উপজেলা যুবলীগের সদস্য। তিনি আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সোনাগাজী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আজিজুল হক হিরনের অনুসারী।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সোমবার সাড়ে ১১টার দিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমান-ফারহান ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপক আলী আক্কাস সোনাগাজী-কোম্পানীগঞ্জের ছোট ফেনী নদীর ওপর ব্রিজের টোলের দরপত্র নিয়ে ফেনী সড়ক ভবনে আসেন।

সেখানে মোটরসাইকেল পার্কিং করতে গেলে আগে থেকে অবস্থান নেওয়া সোনাগাজীর সেন্টু এবং পশ্চিম চরদরবেশ এলাকার টিপুসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজন তার সঙ্গে কথা আছে বলে বাইরে যেতে বলে। আলী আক্কাস বাইরে যেতে অস্বীকৃতি জানালে সেন্টু এবং টিপুর নেতৃত্বে তাকে মোটরসাইকেল থেকে টেনে নামিয়ে সড়ক ভবনের নিচে মারধর শুরু করে।  

একপর্যায়ে দেয়ালের সঙ্গে তার মাথা ধরে ধাক্কা দিয়ে আঘাত করেন। পরে তার কাছ থেকে মোবাইল, মানিব্যাগ, দরপত্রের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ব্যাংক চেক, পে-অর্ডার ও হিসাবের খাতা নিয়ে ফেনী সার্কিট হাউজ রোডের একটি চা দোকানে নিয়ে যায়। সেখানে ২০-৩০ জন তাকে আটকে রেখে মারধর করতে থাকে। তখন সেন্টু মানিব্যাগ এবং হিসাবের খাতা ফিরিয়ে দেন। তার কাছে মোবাইল, দরপত্রের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, চেক ও পে-অর্ডার ফেরত চাইলে এমপির কাছ থেকে নিস বলে আলে যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দরপত্র আহ্বানে সেন্টুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘সেন্টু এন্টারপ্রাইজ’ ছাড়া আর কোনো প্রতিষ্ঠানের আবেদন জমা পড়েনি।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আলী আক্কাস বাদি হয়ে সেন্টু এবং টিপুর নাম উল্লেখ করে এবং আরও ৩০-৪০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ফেনী মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।  

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমান-ফারহান ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মুসাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বলেন,  আমার প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক আলী আক্কাস ফেনী মহিপালের সড়কে ভবনে দরপত্র জমা দেওয়ার উদ্দেশ্য গেলে তাকে মারধর করে আটকে রাখা হয়। দরপত্র জমা দেওয়ার নির্ধারিত সময় শেষ হলে তাকে ছেড়ে দেয় তারা। এবিষয়ে আমি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের অবহিত করেছি। এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার বিচার চাই।  

অভিযোগের প্রসঙ্গে অভিযুক্ত সেন্টু বলেন, আমি শারীরিক অসুস্থতার জন্য বাসায় অবস্থান করছি। আমাকে হয়রানি করার জন্যই একটি পক্ষ এধরনের মিথ্যা অভিযোগ তুলছে। এখানে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।
ফেনী সড়ক বিভাগের নির্বাহী বিনয় কুমার পাল বলেন, ইতোমধ্যে ঘটনাটি জানতে পেরে সড়ক বিভাগের তদন্ত শুরু হয়েছে। আমরা ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সোনাগাজী-কোম্পানীগঞ্জের ছোট ফেনী নদীর ওপর ব্রিজের টোলের দরপত্র প্রক্রিয়াটি বাতিল করা হয়েছে। নতুন করে আবার দরপত্র আহ্বান করা হবে।

এ ব্যাপারে ফেনী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


বাংলাদেশ সময়: ২২১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০২৪ 
এসএইচডি/জেএইচ 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।