ঢাকা: তাপপ্রবাহের তীব্রতা ধীর গতিতে কমছে। বাড়ছে বৃষ্টিপাতের প্রবণতাও।
বৃহস্পতিবার (২ মে) এমন পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানান, দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আগের দিনের চেয়ে এক ডিগ্রি কমেছে।
যশোরে রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা আগের দিনের চেয়ে প্রায় দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস কমেছে।
ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা আগের দিনে চেয়ে প্রায় দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস কমেছে। এছাড়া দেশের প্রায় সব জায়গায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির নিচে নেমে এসেছে।
এদিকে বৃষ্টিপাতের এলাকাও বেড়েছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে কুতুবদিয়ায়, ২৭ মিলিমিটার। ফেনী, মাঈজদীকোর্ট, কুমিল্লা, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, সীতাকুণ্ড, সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম, সিলেট, নেত্রকোনা, রংপুর ও দিনাজপুরে কম-বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চল হয়ে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
শুক্রবার (০৩ মে) চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দু'এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে, সে সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
রাজশাহী, পাবনা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। চাঁদপুর জেলাসহ ঢাকা, রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগ এবং রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা দেশের কিছু জায়গা হতে প্রশমিত হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস এবং রাতের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সে. হ্রাস পেতে পারে।
শনিবার (৪ মে) বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু'এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে, সে সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে।
এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। বিরাজমান তাপ প্রবাহ পূর্ববর্তী এলাকায় অব্যাহত থাকতে পারে।
রোববার (৫ মে) ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, ঢাকা এবং বরিশাল বিভাগের দু'এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সে সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। বিরাজমান তাপ প্রবাহ কিছু এলাকায় প্রশমিত হতে পারে এবং তীব্রতাপপ্রবাহ হ্রাস পেতে পারে। বর্ধিত পাঁচ দিনে সারাদেশে বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বিস্তার লাভ করতে পারে। তাপমাত্রা আরও হ্রাস পেতে পারে এবং তাপপ্রবাহের এলাকা কমে যেতে পারে।
গত ২১ মার্চ শুরু হওয়া তাপপ্রবাহ টানা ৩৩ দিন ধরে চলছে, যা ৭৬ বছরের মধ্যে রেকর্ড।
গত ৩০ এপ্রিলে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় যশোরে, যা গত পাঁচ দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। এদিন চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ১৯৯৫ সালে চুয়াডাঙ্গায় ৪৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। ২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল আগের নয় বছরের মধ্যে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ঈশ্বরদীতে, ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ২০১৪ সালের মে মাসে চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৯৭২ সালের ১৮ মে, ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এপ্রিলে ২৯ এপ্রিল ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০২৩ সালের ১৬ এপ্রিল ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে তার আগের ৫৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ঢাকায় ১৯৬৫ সালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ওঠেছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এর আগে ১৯৬০ সালে ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হয়েছিল ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি বছর টানা ৩৩ দিন ধরে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, যা ৭৬ বছরের মধ্যে রেকর্ড।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, মে ২, ২০২৪
ইইউডি/জেএইচ