চুয়াডাঙ্গা: ১৬৪ ধারায় স্বেচ্ছায় আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে দোষ স্বীকার করে নিজের শিশু কন্যাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার বর্ণনা দিয়েছেন মা পপি খাতুন।
৭ বছরের শিশু মাইশাকে হত্যার পর নিজেকে বাঁচাতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মাইশা মারা গিয়েছে এমন নাটক সাজিয়ে মোবাইল ফোনের চার্জার গলায় জড়িয়ে রাখেন।
সোমবার (০৬ মে) সকালে চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার আরএম ফয়জুর রহমান প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি সকালে আলমডাঙ্গা উপজেলার ভোগাইল বগাদী গ্রামের মাইশা খাতুন নামে ৭ বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়। মোবাইল চার্জার নিয়ে খেলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায় বলে ধারণা করা হয়। তার মায়ের চিৎকারে প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ওইদিন চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়।
অপমৃত্যু মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আতিকুর রহমান জুয়েল রানা মামলার তদন্ত করার সময় দুর্ঘটনামূলক স্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ হলে শিশুটির ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় শিশু মাইশাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এরই ভিত্তিতে গত ৩ মে নিহত মাইশার নানা শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আরএম ফয়জুর রহমানসহ মামলার তদন্তকারীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে মা পপি খাতুনের কথা বার্তায় সন্দেহ হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসেন। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তিনি স্বেচ্ছায় এই হত্যার দায় স্বীকার করেন। তিনি পারিবারিক কারণে নিজেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে জানান। হত্যাকারী পপি খাতুন আগের পারিবারিক ব্যক্তি জীবন, একাধিক বৈবাহিক জীবন আবার বিবাহ বিচ্ছেদ এবং বিবাহ বিচ্ছেদ পরবর্তী সময়ের বিভিন্ন তথ্য পাওয়া গেছে যা এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে। মাইশা খাতুন ভোগাইল বগাদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী। মা-বাবার বিয়ে বিচ্ছেদের পর মায়ের সঙ্গে মাইশা নানা বাড়িতেই থাকতো।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, মে ০৬, ২০২৪
আরএ