ফেনী: কালবৈশাখী ঝড়ে ফেনীতে নুয়ে পড়েছে কৃষকের পাকা বোরো ধান। কিছু স্থানে ডুবে আছে পানিতে।
কৃষি বিভাগ বলছে, ধান যেহেতু ৮০ শতাংশের মতো পেকেছে, সেক্ষেত্রে চিটার আশঙ্কা নেই। তবে হারভেস্টিং খরচ কিছুটা বাড়তে পারে। এখনই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা না গেলেও মাঠ পর্যায়ে ধান দ্রুত তুলে নিতে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা।
ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের ইলাশপুর গ্রামের ষাটোর্ধ্ব শফিউল্লাহ। নিজে গায়ে গতরে খেটে পরের ৮০ শতক জমি বর্গা নিয়ে আবাদ করেছিলেন বোরো ধান। সবমিলিয়ে খরচ পড়েছে হাজার পঞ্চাশের মতো। আশা করেছিলেন পাকা ধান ঘরে তুলে তৃপ্তির হাসি হাসবেন। কিন্তু তা আর হলো না। গতকালের কালবৈশাখী ঝড় ও তুমুল বৃষ্টিতে নুয়ে পড়েছে তার ধান। হয়ে পড়েছে জলমগ্ন। এখন অর্ধেক ধানও ঘরে তুলতে পারেন কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন।
এমন চিত্র শুধু কৃষক শফিউল্লাহর জমিতেই নয়। জেলার সোনাগাজী, ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী, পরশুরাম ও দাগনভূঁঞার আরও বিভিন্ন এলাকায় ঝোড়ো বৃষ্টিতে নুয়ে পড়েছে পাকা বোরো ধান। মাঠের ধান নিয়ে দিশেহারার দশা কৃষকদের।
আবুল কালাম নামে আরেক কৃষক জানান, তিনি ১২০ শতক জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন। ধান পুরোপুরি পাকেনি। বৃষ্টির কারণে ধান নুয়ে পড়েছে। ৪০ শতাংশ ধানও তুলতে পারবেন কিনা শঙ্কা রয়েছেন।
এদিকে কৃষি বিভাগ বলছে, ঝড় ও বৃষ্টির কারণে ধান কিছু জায়গায় নুয়ে পড়েছে ও পানিতে ডুবেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি হবে না। যেহেতু ধান পেকে গেছে। তবে ধান কাটা, মাড়াইসহ হারভেস্টিং খরচ কিছুটা বাড়তে পারে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফেনীর উপ-পরিচালক একরাম উদ্দিন জানান, ধানে বেশি ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। ৩৫ শতাংশের মতো ধান ইতোমধ্যে কাটা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলা হয়েছে পানি নামানোর বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে।
ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রণব চন্দ্র মজুমদার বলেন, আমরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছি। নিরাপদে মাঠ থেকে ধান তুলে নেওয়ার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলায় ৩০ হাজার ৯৯০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। অর্জন হয়েছে ৩১ হাজার ২৭৭ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে বোরো ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১ লাখ ২০ হাজার ৮২০ মেট্রিক টন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০২৪
এসএইচডি/আরবি