ঢাকা, বুধবার, ১৩ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জুন ২০২৪, ১৮ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

সৌদির সঙ্গে মিল রেখে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঈদুল আযহা পালন

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩০ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২৪
সৌদির সঙ্গে মিল রেখে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঈদুল আযহা পালন

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে পবিত্র ঈদুল আযহা পালিত হচ্ছে। রোববার (১৬ জুন) ঈদের নামাজ আদায়ের মাধ্যমে এ উৎসব পালন শুরু হয়।

আগামীকাল সোমবার (১৭ জুন) সারা দেশে ঈদুল আযহা পালিত হবে।

বাংলানিউজের স্টাফ ও ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্টদের পাঠানো তথ্যে জানা গেছে, ফেনীর তিন স্থানে ঈদের নামাজ আদায় হয়েছে। সকালে জেলার পৃথক তিনটি স্থানে এ জামাত আয়োজিত হয়।

ফেনী সদর উপজেলার ফরহাদনগর ইউনিয়নের পূর্ব সুলতানপুর ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পৃথক দুটি পাড়া ও পরশুরাম পৌরসভার কোলাপাড়া এলাকায় ঈদের জামাত আয়োজিত হয়। ফরহাদনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন টিপু এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

পরশুরাম পৌর এলাকার কোলাপাড়া ছয়ঘরিয়া এলাকার একটি স্থানে ঈদের জামাদের তথ্য নিশ্চিত করেছেন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন।

নোয়াখালীর দুই উপজেলার ৬ মসজিদে আয়োজিত হয়েছে ঈদের জামাত। সকাল সোয়া ৮টা থেকে সোয়া ৯টা পর্যন্ত জেলার সদর ও বেগমগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন মসজিদে এ জামাত আয়োজিত হয়। অন্তত সাড়ে ৪৫০ মানুষ সৌদির সঙ্গে মিল রেখে ঈদ পালন করছে উপজেলাগুলোয়।

দিনাজপুরে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঈদের জামাত আয়োজিত হয়েছে। কয়েকটি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মুসল্লিরা ঈদ পালন করছেন। সকালে তারা ঈদের জামাত আয়োজনের মাধ্যমে দিন শুরু করেন।

সকাল পৌনে ৮টায় দিনাজপুর চারুবাবুর মোড়ের পার্টি সেন্টারে জামাত আয়োজন করা হয়। ইমামতি করেন বিরল উপজেলার ফ্যামিলি কেয়ার মাদরাসার পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক। এতে প্রায় তিন শতাধিক মুসল্লি অংশ নেন। বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন স্থান থেকে মুসল্লিরা না আসতে পারায় জামাতে মুসল্লির উপস্থিতি কিছুটা কম হয়েছে বলেও জানান আয়োজকরা।

জেলার বিরামপুর, চিরিরবন্দর, কাহারোল, বোচাগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি উপজেলায়ও স্থানীয়ভাবে ঈদের নামাজ আয়োজিত হয়। দিনাজপুরের প্রায় দুই হাজার পরিবার সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ পালন করছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৪ গ্রামে ঈদ পালিত হচ্ছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার চার গ্রামের অন্তত তিন শতাধিক মানুষ ঈদ উদযাপন করছে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. গোলাম মোস্তাফা জানান, সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মিল রেখে দেশের অনেক স্থানে ঈদের নামাজ আদায় করেন কিছু মানুষ। এরই ধারাবাহিকতায় চাঁপাইনবাবগঞ্জেও কিছু মানুষ ঈদ পালন করছে।

সাদুল্লাপুর ও পলাশবাড়ীর দুই গ্রামে ঈদুল আযহা পালিত হচ্ছে। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সাদুল্লাপুর উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের বুজরুক জামালপুর পুর্বপাড়া জামে মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন মাওলানা মো. সাইফুল ইসলাম। নামাজে স্থানীয়দের পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকে শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেয়।

সকাল ৯টার দিকে পলাশবাড়ী উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের ঘোড়াবান্দা মধ্যপাড়া আহেলা হাদিস জামে মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।   এতে ৩০-৩৫ জন মুসল্লি অংশ নেন। নামাজে ইমামতি করেন হাফেজ মো. মশিউর রহমান।    

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে মৌলভীবাজারেও ঈদ পালিত হচ্ছে। জেলার শতাধিক পরিবার ঈদুল আযহা পালন করছে। সকালে মৌলভীবাজার শহরের সার্কিট হাউস এলাকার আহমেদ শাবিস্তা নামক বাসায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত নারী-পুরুষ মুসল্লি অংশ নেন। নামাজে ইমামতি করেন আলহাজ্ব আব্দুল মাওফিক চৌধুরী (পীর সাহেব উজান্ডি)।

আলহাজ্ব আব্দুল মাওফিক চৌধুরী বলেন, কুরআন ও হাদিস অনুসারে পৃথিবীর যেকোনো জায়গায় চাঁদ দেখা গেলে রোজা এবং ঈদ করতে হয়। সেই অনুসারে আমরা ঈদের নামাজ আদায় করেছি।

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার তিন জায়গায় ঈদুল আযহা পালিত হচ্ছে। সকাল ৮টায় উপজেলার গোলাম হযরতের মিলচাতাল চত্বরে প্রথম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন মো. রেজাউল ইসলাম। ঈদ জামাতে উপজেলার কয়েকটি গ্রাম থেকে অর্ধ শতাধিক মুসল্লি অংশ নেন।

উপজেলার ভালকি ও নিত্যনন্দপুর গ্রামেও ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে দুই শতাধিক মুসল্লি অংশ নেন বলে জানা গেছে। হরিণাকুণ্ডু, ফলসী, কুলবাড়িয়া, ভালকী, নিত্যনন্দপুর গ্রামসহ জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে মুসুল্লিরা ঈদ জামাতে অংশ নেন।

হরিণাকুণ্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউর রহমান বলেন, উপজেলার তিনটি জায়গায় সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে কিছু মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার স্বার্থে সেসব জায়গায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

শরীয়তপুরের ৩০ গ্রামে পালিত হচ্ছে ঈদুল আযহা। ৬ উপজেলার এসব গ্রামে সুরেশ্বর পীরের অনুসারীরা ঈদ পালন করছেন।

সকাল সাড়ে ৯টায় সুরেশ্বর দরবার শরীফ মসজিদে অনুসারীরা ঈদের নামাজ আদায় করেন। সুরেশ্বর দরবার শরীফের বর্তমান গদীনিশীন মুতাওয়াল্লি সৈয়দ কামাল নুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।


লক্ষ্মীপুরের ১১ গ্রামের সহস্রাধিক মানুষও ঈদ পালন করছেন। মাওলানা ইসহাক (রা.) অনুসারী হিসেবে ৪৭ বছর ধরে ঈদ পালন করেন তারা। সকাল ১০টায় রামগঞ্জ উপজেলার খানকায়ে মাদানিয়া কাসেমিয়া মাদরাসায় প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন মাওলানা মোহাম্মদ রুহুল আমিন।

এছাড়া উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের দক্ষিণ পূর্ব তালিমুল কুরআন নূরানী মাদরাসা ঈদগাহ, পূর্ব বিঘা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, পশ্চিম নোয়াগাঁও জামে মসজিদে ও রায়পুরের কলাকোপা গ্রামে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। শাহরাস্তি উপজেলার শতাধিক মানুষ নোয়াগাঁও ঈদগাঁও এসে ঈদের নামাজ আদায় করেন।

দক্ষিণ পূর্ব তালিমুল কুরআন মাদরাসা ঈদগাহের খতিব মাওলানা আমিনুল ইসলাম খান বলেন, আমরা হানাফি মাজহাবের অনুসারী। প্রত্যেকটি মাজহাবে একসঙ্গে সারা বিশ্বে ঈদের জামায়াত আদায় করার ফতোয়া রয়েছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে ঈদ উদযাপন করা হচ্ছে। আগে যোগাযোগের উন্নত মাধ্যম ছিল না। এজন্য মানুষ সৌদি আরবের একদিন পর ঈদ করতো। কিন্তু এখন যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক উন্নত। এতে আমরা পিছিয়ে থাকার সুযোগ নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২৪
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।