ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

৪ দিন খোঁজ নেই জয়ের, পরিবারে চলছে আহাজারি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২, ২০২৪
৪ দিন খোঁজ নেই জয়ের, পরিবারে চলছে আহাজারি

কক্সবাজার: ১০ মিনিটের জন্য ঘর থেকে বের হয়ে চারদিনেও খোঁজ মেলেনি জয় হোড়ের (২৫)। একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলের সন্ধান না পেয়ে পরিবারটিতে চলছে আহাজারি।

কান্না করতে করতে বার বার জ্ঞান হারাচ্ছেন মা শৈল বালা হোড় (৫৩)।

এরই মধ্যে থানা-পুলিশ, র‌্যাব কার্যালয়, গোয়েন্দা পুলিশসহ সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ খবর নেওয়া হয়েছে। কেউ মুক্তিপণও দাবি করেননি। এ ঘটনায় গত ৩০ জুলাই রামু থানায় সাধারণ ডাইরী করেন তার বাবা অজিত হোড়।

জয় কক্সবাজারের রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের উত্তর শ্রীকুল গ্রামের অজিত হোড়ের (৬৪) ছেলে। জয় পেশায় ইলেক্ট্রিশিয়ান। বাড়ির পাশের একটি দোকানে ইলেক্ট্রিশিয়ানের কাজ করতেন তিনি।

এদিকে নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে জয়ের বন্ধুবান্ধব, আত্মীয় স্বজনসহ অনেকেই সন্ধান চেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। গত কয়েকদিন ধরে বিষয়টি ফেসবুকে ভাইরালও হয়। তাকে কি অপহরণ বা গুম করা হয়েছে, ছেলেটি কি বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছেন নিশ্চিত নন পরিবারের কেউই।

জয়ের বাবা অজিত হোড় বলেন, গত ২৯ জুলাই রাত ১০টার দিকে ১০ মিনিটের জন্য ঘর থেকে বের হয় জয়। ঘণ্টা পার হলেও ঘরে না ফেরায় তার মোবাইলে বার বার ফোন করি। রাত পৌনে ১১টার দিকে একবার ফোন ধরে একটা অনুষ্ঠানে আছি বলে ফোন কেটে দেয়। এতে আরও সন্দেহ বাড়ে।

অজিত বলেন, ফোন ধরলেও ওই কণ্ঠ আমার ছেলের বলে মনে হয়নি। তাই এর পরে ছেলের নম্বরে আরও কয়েকশো বার ফোন করি, ফোন ধরে না। রাত পৌনে ২টা থেকে ওই ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

পরদিন ৩০ জুলাই রামু থানায় জিডি (নম্বর- ১২২৬) করা হয়। এরপর থানা, র‌্যাব কার্যালয়ে অনেকবার ধর্ণা দিয়েও কোনো কাজ হয়নি। ছেলে কি বেঁচে আছে নাকি তাকে মেরে ফেলা হয়েছে তাও জানেন না জয়ের বাবা-মা।

বাবা অজিত হোড় বলেন, জয় আমার একমাত্র ছেলে। দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। আরও এক মেয়ে কলেজে পড়ে। আমার বয়স হয়েছে, কোনো কাজ কর্ম করতে পারি না। বর্তমানে ছেলের আয়ে কলেজ পড়ুয়া মেয়েসহ চারজনের সংসার চলে। এমন পরিস্থিতিতে আমার পরিবারে মহা দুর্দিন নেমে এসেছে।

জয়ের সঙ্গে কারও কোনো বিরোধ নেই, কোনো অসামাজিক কাজেও জড়িত নন জানিয়ে বোন কলি হোড় বলেন, নিখোঁজের দিন থেকে তাদের মায়ের কান্না থামানো যাচ্ছে না। কাঁদতে কাঁদতে কিছুক্ষন পর পর অজ্ঞান হয়ে পড়ছেন তাদের মা শৈলবালা হোড়। তার ভাইটির উদ্ধারে আইনশৃংখলা বাহিনীর আন্তরিক সহযোগিতা চান কলি।

পাশের বাড়ির বাসিন্দা জিয়াউর রহমান সেলিম বলেন, ছেলেটি আমাদের চোখের সামনে বড় হয়েছে। কোনোদিন তার সম্পর্কে খারাপ কিছু শোনা যায়নি। আর পরিবারটিও এমন স্বচ্ছল নয় যে, মুক্তিপণের আশায় কেউ তাকে অপহরণ করবে। আসলে কি হয়েছে বিষয়টি বুঝে উঠতে পারছি না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু তাহের দেওয়ান বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি অবগত হওয়ার পর থেকে আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি। বর্তমানে সব থানায় ম্যাসেজ দিয়েছি।

নিখোঁজ ছেলেটার মোবাইলের শেষ লোকেশন উত্তর ফতেখাঁরকুল দেখিয়েছে জানিয়ে ওসি বলেন, ওই এলাকায় একাধিকবার পুলিশ অভিযান করেছে কিন্তু পাওয়া যায়নি। বর্তমানে মোবাইল ফোনটি বন্ধ আছে। এরপরেও আমরা ম্যানুয়ালি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০১ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০২৪
এসবি/এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।