ঢাকা, সোমবার, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

খুবিতে শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ’র স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪
খুবিতে শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ’র স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত

খুলনা: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত ডিসিপ্লিনের ’১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ-এর স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে শুরু হওয়া এ স্মরণ সভা চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।

সভায় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ৫টি সুনির্দিষ্ট দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো- (১) ১৮ জুলাই শহীদ মীর মুগ্ধ দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান ও যথাযথ মর্যাদায় পালন করা, (২) মেইন গেটের নাম শহীদ মীর মুগ্ধ তোরণ হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়া, (৩) টিএসসির সামনে শহীদ মীর মুগ্ধ’র স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ ও স্মৃতিফলক নির্মাণ, (৪) বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে রাষ্ট্রের কাছে শহীদ মীর মুগ্ধ হত্যার বিচার চেয়ে আবেদন, (৫) এই আন্দোলনে সকল শহীদের স্মরণে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাদুঘরে জুলাই গণহত্যা নামে একটি স্মৃতি কর্নার করা।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো ন্যায্য। এ বিষয়ে আমার যা করণীয় আছে তা করবো। তবে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ না পর্যন্ত এ দাবিগুলো পূরণ করা সম্ভব হবে না। এ দাবির সাথে তিনি যোগ করে বলেন, মুগ্ধ স্মৃতির উদ্দেশ্যে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক আবাসিক হল, প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনে ‘মুগ্ধ পানি সরবরাহ কর্নার’ করা হবে। মৃত্যুর আগে আন্দোলনের মধ্যে ‘পানি লাগবে পানি’- মুগ্ধ’র এই কথা আমাদের হৃদয়ে গেঁথে আছে। তাই দেশের প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘পানি লাগবে পানি’ এই স্লোগান লিখে মুগ্ধ কর্নার করার উদ্যোগ নিতে হবে। যার শুরুটা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হবে। পর্যায়ক্রমে তা দেশে ছড়িয়ে পড়বে। মুগ্ধ’র এই মুগ্ধতা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে হবে।

স্মরণ সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. এস এম মাহবুবুর রহমান, শহিদ মীর মুগ্ধ’র বড় ভাই মীর মাহমুদুর রহমান দীপ্ত ও জমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। সভাপতিত্ব করেন গণিত ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. মো. আজমল হুদা।

স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন কলা ও মানবিক স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. শাহজাহান কবীর, পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. মো. হারুনর রশীদ খান, গণিত ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মো. রফিকুল ইসলাম, ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. এ টি এম জহিরুদ্দিন, ফরেস্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মো. গোলাম রাক্কিবু, কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে বক্তব্য রাখেন ‘বন্ধন’ এর সাধারণ সম্পাদক সহকারী রেজিস্ট্রার এস এম মোহাম্মদ আলী, গণিত ডিসিপ্লিনের অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, মুগ্ধকে নিয়ে স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও নর্দার্ন ইউনিভার্সিটির প্রভাষক মো. মতিউর রহমান।

শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে স্মৃতিচারণ করেন ’১৭ ব্যাচের মোস্তাক, ’১৯ ব্যাচের অপূর্ব, শাহরিয়ার, সাকিব, রবিউল, জাকির, ’২০ ব্যাচের শামীম, সাইফ, বাঁধন, সাকিব, প্রাপ্তি, রিয়াদ, হৃদয়, ফাহাদ, ’২১ ব্যাচের কাশেম আলী, আয়েশা সিদ্দিকা, দুর্জয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ’১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী রিফাহ তাসনিয়া ও ’২০ ব্যাচের সাইফ নেওয়াজ।

স্মরণ সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্কুলের ডিন, ডিসিপ্লিন প্রধান, বিভাগীয় প্রধান, পরিচালকসহ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে পবিত্র ধর্মগ্রন্থসমূহ পাঠের মাধ্যমে স্মরণ সভা শুরু হয়। সভার শুরুতে শহিদ মীর মুগ্ধসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সকল শহিদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। সভায় শহিদ মীর মুগ্ধ’র সংক্ষিপ্ত জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করা হয় এবং তাঁর জীবনীর ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৮,২০২৪
এমআরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।