কুমিল্লা: কুমিল্লায় পিটিয়ে হত্যার পর ঘরের ভেতরেই মাটিচাপা দিয়ে রাখা হয়েছিল মরদেহ। শিয়াল-কুকুরে মাটি আঁচড়ে বের করে ফেলে একটি হাত।
ঘটনাটি ঘটে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার বারুর-পিরোজপুর গ্রামের সীমান্তে। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) মাটিচাপা দেওয়া অর্ধগলিত মরদেহটি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত ব্যক্তির নাম নুরুল ইসলাম (৪০)। তিনি হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার পানিওন্দা গ্রামের মরগিছ ইসলামের ছেলে। এ ঘটনায় নোয়াজ আলী (৬০) নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। আরও দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে তারা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত না থাকায় জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। নোয়াজ আলী হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার বড়কান্দি এলাকার আব্দুল আলীর ছেলে।
শুক্রবার বেলা ১১টায় নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত নোয়াজ আলীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার পর তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেবিদ্বার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহিনুল ইসলাম।
তিনি জানান, নিহত নুরুল ইসলামকে দিনমজুরের কাজের কথা বলে গত ২১ সেপ্টেম্বর শনিবার দেবিদ্বার নিয়ে আসেন অভিযুক্ত নোয়াজ আলী। দুজনই থাকতেন চরবাকর-এলাহাবাদ সংযোগ সড়কের সঙ্গে বারুর-পিরোজপুর গ্রামের সীমান্তের একটি ভাড়া ঘরে। নোয়াজ আলী দেবিদ্বারের বিভিন্ন এলাকায় লোক নিয়ে শ্রমিকের কাজ করতেন।
জাফরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. নাসির বলেন, মরদেহ দেখার পর আমরা নিহতের সঙ্গে থাকা নোয়াজ আলীকে গ্রামবাসীর সহযোগিতায় ধরে আনি। তখন আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করি। তিনি একপর্যায়ে হত্যার দায় স্বীকার করে বলেন, আজ থেকে চার বছর আগে কবিরাজের মাধ্যমে আমার ছেলেকে তাবিজ করে মেরে ফেলেন নুরুল ইসলাম।
এ থেকেই নোয়াজ আলীর রাগ-ক্ষোভ জন্মায় নুরুল ইসলামের প্রতি। এ ঘটনার চার বছর পর গত ২১ সেপ্টেম্বর শনিবার কৌশলে কাজের কথা বলে নুরুল ইসলামকে দেবিদ্বার নিয়ে আসেন। গত সোমবার গভীর রাতে ঘুমন্ত নুরুল ইসলামকে গাছের গুঁড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেন। হত্যার পরপরই একই ঘরে মাটিচাপা দিয়ে রাখেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আলী আকবর, রফিকুল ইসলাম ও স্বপ্না বেগম বলেন, সকালে হঠাৎ তীব্র দুর্গন্ধ বের হয় যা সহ্য করার মতো ছিল না। আমরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি। কিন্তু কোথাও কিছু পাইনি। পরে চরবাকর-এলাহাবাদ সংযোগ সড়ক দিয়ে হাঁটার সময় লোকজন দেখতে পান সড়কের পাশে একটি ঘরে গর্তের মধ্যে মানুষের হাত।
দেবিদ্বার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহিনুল ইসলাম বলেন, মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় এনেছিলাম। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সত্যতা পেয়ে একজনকে আটক রেখে বাকি দুজন ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৪
আরএ