ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ পৌষ ১৪৩১, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

হয়রানি-ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার চায় বঞ্চিত বিধবার পরিবার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২৫
হয়রানি-ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার চায় বঞ্চিত বিধবার পরিবার

ঢাকা: পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্সের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও পিপলস ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান ছিলেন হাসান আহমেদ। করতেন জুট মিলের ব্যবসা; পাট রপ্তানির মাধ্যমে দেশের জন্য বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন করতেন।

২০২০ সালে স্ট্রোকের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। সরে যান পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান পদ থেকে। এ সময় ভাই কবির আহমেদ ও সহকর্মী বিদ্যুৎ ঘোষ হাসানের সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র শুরু করেন। ২০২২ সালের ২৪ জানুয়ারি মৃত্যু বাংলাদেশের বীমা খাত ও ব্যবসায়িক জগতের বিশিষ্ট এ ব্যক্তির।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন জান্নাতুল ফেরদৌস। তিনি হাসান আহমেদের স্ত্রী। স্বামীর সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বিধবা এই নারী ন্যায় বিচারের আবেদন করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপির) সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার ও গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশীদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলেছেন জান্নাতুল ফেরদৌস। তার অভিযোগ, ডিবির হারুন ও তার সহযোগীরা সন্তানসহ তাকে তার স্বামীর সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করছে। বিষয়গুলো তিনি প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইন উপদেষ্টাকে জানাতে চান যেন ন্যায়বিচার পান।

জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, হাসানের অসুস্থতার সময় বিদ্যুৎ ঘোষ তার অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও ফাইল সরিয়ে নেন। ঘটনাটি জানার পর অসুস্থ অবস্থায় হাসান আহমেদ মতিঝিল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (নং ১৩৪) করেন। কিন্তু তারপরও বিদ্যুৎ ঘোষ ও কবির আহমেদ তাকে পরিবারসহ পৈত্রিক বাড়ি ও ব্যক্তিগত অফিস থেকে বের করে দেন।

২০২২ সালের ২৪ জানুয়ারি হাসান আহমেদ প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে মারা যান। তার মৃত্যুর পর বিদ্যুৎ ঘোষ, কবির আহমেদ, ও তাদের সহযোগী আমার নামে একটি মিথ্যা হত্যা মামলা দায়ের করে, যা পরে পল্টন থানার পুলিশ মিথ্যা প্রমাণ করে।  

পল্টন থানা পুলিশ জান্নাতুল ও তার পরিবারকে নির্দোষ ঘোষণা করলেও বিদ্যুৎ ঘোষ ও তার সহযোগীরা ডিবি হারুনের মাধ্যমে প্রভাব খাটিয়ে ফের তাদের বিরুদ্ধেই চার্জশিট দেয়। এর মধ্যে বিদ্যুৎ ঘোষকে জান্নাতুলের দেবর মুসা আহমেদ বেইলি রোডে তিন কোটি টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট উপহার দেন।

জান্নাতুল ফেরদৌস একাধিকবার প্রশাসনের শরণাপন্ন হয়েছেন। কিন্তু কোনো সহায়তা পাননি। শেষ পর্যন্ত গত বছরের ২৩ জুলাই তিনি বিদ্যুৎ ঘোষের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলা (মামলা নম্বর: ২) করেন। তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিন্তু পরে তিনি জামিনে মুক্ত হন এবং জান্নাতুলকে সম্পত্তি ফেরতের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু সেটি এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।

তিনি বলেন, আগামী বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ঢাকার নবম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলার ডিসচার্জ শুনানি হবে। প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইন উপদেষ্টার কাছে বিনীত অনুরোধ, তাকে ও তার পরিবারকে যেন মিথ্যা এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তিনি বিদ্যুৎ ঘোষ ও গংদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার দাবিতে প্রশাসনের কাছে সাহায্যের আবেদনও করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২৫
ইএসএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।