ঢাকা, রবিবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

সন্তানদের গড়ে তুলতে শিক্ষকদের দাবি মানতে হবে: সাকি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২৫
সন্তানদের গড়ে তুলতে শিক্ষকদের দাবি মানতে হবে: সাকি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্যজোট আন্দোলন বাস্তবায়ন কমিটি আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি

ঢাকা: গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, আমাদের সন্তানদের যদি যথাযথভাবে গড়ে তুলতে চাই তাহলে শিক্ষকদের সম্মান দিতে হবে, তাদের সব দাবি মেনে নিতে হবে।

রোববার (১৯ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্যজোট আন্দোলন বাস্তবায়ন কমিটি আয়োজিত ‘বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত বৈষম্যের শিকার সকল স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ন্যায় জাতীয়করণের দাবিতে’ আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন।

জোনায়েদ সাকি বলেন, আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম আমাদের ভবিষ্যৎ কারিগর হয়ে উঠবে। তাদের যদি আমরা যথার্থভাবে গড়ে তুলতে চাই তাহলে যারা তাদের গড়ে তুলবেন সেই শিক্ষকদের মর্যাদা দিতে হবে। তাদের সমস্ত দাবিদাওয়া পূরণ করতে হবে। তাদের জীবনকে একটা মানবেতর জায়গায় রেখে এই জনগোষ্ঠী এই জাতি উপরে উঠবে, তা আশা করা যায় না।

তিনি বলেন, আমরা দেখছি বাংলাদেশের শিক্ষকরা একটা মানবেতর জায়গায় আছেন। বিশেষ করে প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিভিন্ন জায়গায়। কেউ বদলি হতে পারছেন না, কেউ বেতন পাচ্ছেন না, কেউ তাদের মর্যাদা পাচ্ছেন না। কাজেই আমরা এই সমস্ত প্রশ্নগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অভ্যুত্থানের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা সরকার যাতে বাস্তবায়ন করে, সেই দাবি জানাই।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে অন্যান্য বক্তারা বলেন, আমরা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মতো সরকারি নিয়ম অনুসরণ করে ৪০ বছর বিনা বেতনে শিক্ষকতার পেশায় দায়িত্ব পালন করে আসছি। কিন্তু আমাদের কোনো বেতন-ভাতা না থাকায় মানবেতর জীবন যাপন করছি। ১৯৯৪ সালে একই পরিপত্রে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকদের ৫০০ টাকা সরকারিভাবে অনুদান দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়। কিন্তু ১ হাজার ৫১৯টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষকদের বর্তমানে সহকারী শিক্ষকদের বেতন ৩ হাজার ৩০০ টাকা ও প্রধান শিক্ষকদের সাড়ে ৩ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়। বাকি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা জাতীয়করণ তো দূরের কথা, একটি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসাও এমপিওভুক্তির আওতায় আনা হয়নি।

মাদ্রাসা শিক্ষকরা বলেন, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকরা ৪০ বছর বিনা বেতনে শিক্ষকতার পেশায় দায়িত্ব পালন করে মানবেতর জীবন যাপান করে আসছে। তাই শিক্ষা উপদেষ্টা মহোদয়ের প্রতি সবিনয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণসহ ৬ দফা দাবি বাস্তবায়নের জোর দাবি জানাচ্ছি।

ইবতেদায়ি শিক্ষকদের ৬ দফা দাবি
১) মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত সব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসাকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো জাতীয়করণ করা।

২) প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তিসহ সব সুযোগ-সুবিধা দেওয়া।

৩) মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত কোডবিহীন মাদ্রাসাগুলোকে অবিলম্বে কোড নম্বরে অন্তর্ভুক্ত করা।

৪) প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষকদের পিটিআই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।

৫) প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসায় চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর পদ সৃষ্টি করা।

৬) প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলোকে স্থায়ী রেজিস্ট্রেশন প্রদান এবং ভৌত অবকাঠামো নিশ্চিত করা।

আন্দোলন বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক মো. শামসুল আলমের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তৃতা করেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২৫
ইএসএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।