নোয়াখালী: দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত নুরুল ইসলাম ডালিমের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
নুরুর ইসলাম ডালিম নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার নাটেশ্বর ইউনিয়নের ঘোষকামতা গ্রামের গণকবাড়ির মৃত লোকমান হোসেনের ছেলে।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে সোনাইমুড়ির গ্রামের বাড়িতে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
নিহত ডালিমের গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। হত্যকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী ।
নুরুর ইসলাম ডালিম তিন বছর আগে পরিবারের সবার মুখে হাসি ফোটানোর জন্য দক্ষিণ আফ্রিকায় যান। সেখানে তিনি জোহানেন্সবার্গের পাশে এ্যালডারাডো পার্ক (সাউথ গেইট) শহরে ছোট একটি দোকান নিয়ে মুদি মালের ব্যবসা শুরু করতেন। কথা ছিলো কিছু দিনের মধ্যে একমাত্র ছোট ভাই বশিরকে তার কাছে নিয়ে যাবে। কিন্তু ভাইকে আর নেওয়া হলো না। তিনি নিজে লাশ হয়ে ফিরে আসলেন গ্রামের বাড়িতে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২৮ ডিসেম্বর (রোববার) বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টার সময় কৃষাঙ্গরা দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে তার দোকানে প্রবেশ করে এবং এলোপাতাড়ি গুলি করে লুটতরাজ চালায়। এসময় তার সঙ্গে থাকা ব্যবসায়ীক পার্টনার একই এলাকার তানসেন নামে আরো যুবক ভয়ে পালিয়ে যায়। পরে বুকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ডালিমকে স্থানীয়রা হাসপাতালে নিলে ডাক্তারার তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
বুধবার সকালে তার মৃতদেহ গ্রামের বাড়িতে আনা হলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা ঘটে। মা-বোন, ভাই বারবার জ্ঞান হারিয়েছেন। অবুঝ দুটি সন্তানকে আঁকড়ে ধরে মা পারভীন আক্তার সামনের দিনগুলো কি ভাবে কাটাবেন সেই বিলাপ করছেন।
নিহতের বড় বোন ও নিহতের ছোট ভাই বসির আহম্মেদ বাংলানিউজকে জানায়, ডালিম মারা যাওয়ার আগে সর্বশেষ কথা বলেছে মায়ের সঙ্গে। মাকে কথা দিয়েছিলো অল্প দিনের মধ্যে ছোট ভাইকেও তার কাছে নিয়ে যাবে। কিন্তু আর তাকে নেওয়া হলো।
নিহত ডালিমের মা সন্তানের হত্যাকারীদের বিচার দাবি করেন।
নিহতের বড় বোনের জামাই রুহুল আমিন বাংলানিউজকে জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় নিহত ডালিমের নামাজে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। জানাজা আসা তার সঙ্গে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকার বন্ধু ও এলাকাবাসী এ ঘটনার জন্য দায়ী সন্ত্রাসীদের শাস্তির পাশাপাশি সরকার দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাসরত ১০ লাখ বাঙালির জীবেনর নিরপাত্তার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রবাসী ব্যবসায়ী আবদুল মমিন বাংলানিউজকে জানান, প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে শত শত যুবক পরিবারের একটু সুখ আর স্বাচ্ছন্দের কথা মাথায় রেখে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় যায়। কিন্তু তাদের নিরাপত্তা নেই।
গত কয়েক বছরে নোয়াখালীর অনেক যুবক প্রাণ হারিয়েছে সে দেশে গিয়ে। তাদের কথা চিন্তা করে সরকার দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এটাই দাবি এলাকাবাসীর।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৪