ময়মনসিংহ: বাড়ি থেকে বাইরে বের হলেই যাদের ভয়ে বুক দুরু দুরু কাঁপে, পায়ে হেঁটে তারাও ছুটলো টাউন হলের দিকে। সব ভয়-বাধা জেঁকে বসা অবরোধভীতি আর রাজনীতির আকাশের গুচ্ছমেঘ কাটিয়ে মেতে উঠলো প্রাণের দাবি ময়মনসিংহ বিভাগের স্বপ্ন পূরণের উৎসবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ময়মনসিংহ বিভাগ বাস্তবায়নের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর বৃহস্পতিবার (২২ জানুয়ারি) সন্ধ্যার আগমুহূর্তে শহর জুড়ে প্রাণের উচ্ছ্বাসে বিজয় মিছিলের ঢল নামে ময়মনসিংহ শহরে।
সর্বজনীন উৎসবের মতোই আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা। তারুণ্যের কণ্ঠে স্লোগান ধ্বনিত হতে থাকে- ‘শেখ হাসিনা কথা দিলো, ময়মনসিংহ বিভাগ হলো। ’
বাদ্যযন্ত্রের তালে তাল মিলিয়ে নেচে-গেয়ে প্রাণের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছিলেন সদর উপজেলার আকুয়া মোড়লপাড়া এলাকার সোহাগ বিন আজিজ। তার ঢঙয়ে উচ্ছ্বসিত আরো ৫০ তরুণ।
বিজয় মিছিলের ঠিক সামনে থাকা যুবলীগ নেতা শাহীনুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বঞ্চনার শেকলবন্দি ছিলাম এতদিন। প্রধানমন্ত্রী আমাদের ভাগ্যের বন্ধ দুয়ার খুলে দিয়েছেন। আমার এলাকার মানুষকে সঙ্গে নিয়েই এ আনন্দের মিছিলে শরিক হতে এসেছি আমি।
ময়মনসিংহ পৌরসভার উদ্যোগে বের হওয়া এ বিজয় মিছিলে স্বতঃস্ফূর্ত প্রাণের আবেগে যোগ দেন নারীরাও। স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও এনজিওর সঙ্গে সম্পৃক্ত এ সব নারীদের একজন সুলতানা বেগম।
তিনি জানান, এ অঞ্চলের মানুষের নতুন স্বপ্ন বুনন, প্রত্যয় ও প্রাণশক্তি হচ্ছে ময়মনসিংহ বিভাগ। প্রধানমন্ত্রীর এ যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত আমাদের ভাগ্যের শিঁকেয় ছেঁড়া উৎসবের উপলক্ষ তৈরি করেছে।
বিজয় মিছিলের আয়োজক ময়মনসিংহ পৌরসভার মেয়র ও তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা মো. ইকরামুল হক টিটু র্যালির আগে এক বক্তৃতায় বলেন, প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু কন্যা, জননেত্রী শেখ হাসিনা ময়মনসিংহ বিভাগের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীকে সাধুবাদ দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের অনেকদিনের লালায়িত স্বপ্ন তিনি পূরণ করেছেন। তাই, আমাদের প্রাণের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতেই সবাইকে নিয়ে এ আনন্দ মিছিল।
ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা বলেন, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা যা বিশ্বাস করেন, তাই বলেন। প্রায় তিন দশকের ঝুলে থাকা স্বপ্ন তিনি পূরণ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী অতি দ্রুত ময়মনসিংহ বিভাগ বাস্তবে রূপ দেবেন, এ বিশ্বাস আমরা করি।
নবীন-প্রবীণ দু’জন প্রতিনিধি ও নেতার বক্তব্যের এ সময়টাতে টাউন হলের মাঠ ও সামনে-পেছনের সড়ক লোকে লোকারণ্যে পরিণত হয়। তারপর রাজপথ হয়ে ওঠে মানুষের মহামিলন মেলার প্রাণকেন্দ্র।
শহরের টাউন হল, নতুন বাজার, গাঙ্গিনারপাড় ও স্টেশন রোড এলাকায় সড়কের দু’পাশে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষ করতালি দিয়ে স্মরণকালের দীর্ঘ এ বিজয় মিছিলকে অভিবাদন জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৫