সিলেট: সিলেট জেলা স্টেডিয়ামের টিপু মজুমদার প্রেসবক্সের পার্শ্ববর্তী তৃতীয়তলা ভবনের ছাদে কাঠ ও বাঁশের সমন্বয়ে গ্যালারি নির্মাণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্ট উপলক্ষে স্টেডিয়ামে এ গ্যালারি নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
খোদ ক্রীড়া সংগঠকরাও এই গ্যালারি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
ক্রীড়ামোদীরা অভিযোগ করেন, টিকেট বিক্রির উদ্দেশ্যেই ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত এই গ্যালারি নির্মাণ করা হয়েছে। দর্শকদের চাপে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, স্টেডিয়ামের টিপু মজুমদার প্রেসবক্সের পার্শ্ববর্তী তৃতীয় তলা ভবনের ছাদে কাঠ ও বাঁশের সমন্বয়ে গ্যালারি নির্মাণ করা হয়েছে। তাতে বসানো হবে প্লাস্টিকের চেয়ার। স্টেডিয়ামের প্রবেশ দরজার পাশের খালি জায়গাতেও একই ধরনের গ্যালারি নির্মাণ করা হয়েছে।
একটি আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্টে কাঠ ও বাঁশের অস্থায়ী গ্যালারি কতটুকু যৌক্তিক এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ক্রীড়ামোদীরা।
তৃতীয় তলার উপরে নির্মিত কাঠের গ্যালারি ঝুঁকিপূর্ণ মন্তব্য করে সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম সুনু বাংলানিউজকে বলেন, অস্থায়ী কাঠের গ্যালারি নির্মাণের ব্যাপারে আমাদের সঙ্গে কেউ আলোচনা করেননি।
তিনি জানান, বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্টের জন্য তারা স্টেডিয়ামটি ক্রীড়া পরিষদের কাছে হস্তান্তর করেছেন। যে কোনো খেলায় সর্বোচ্চ ১০/১২ হাজার দর্শকের ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন এই স্টেডিয়ামে সাধারণত সাড়ে সাত থেকে আট হাজার টিকেট বিক্রি হয়ে থাকে।
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) আহসান আহমেদ অমিত বাংলানিউজকে বলেন, অস্থায়ী গ্যালারি নির্মাণের কথা তিনি শুনেছেন। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত কত টিকেট বিক্রি হয়েছে, এ তথ্য তার কাছে নেই।
এ বিষয়ে জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহি উদ্দিন সেলিমের সঙ্গে আলাপ করতে বলেন তিনি।
এ বিষয়ে জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহিউদ্দিন আহমদ সেলিমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে, সোমবার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় সিলেট সার্কিট হাউসে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্টে স্থানীয় সমন্বয়ক কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভাগীয় কমিশনারসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তি, বিভাগীয় ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তারা এবং ক্রীড়া সংগঠকরা অংশ নেন।
সভায় ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত টিকেট বিক্রির বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। সোমবার পর্যন্ত ১২ হাজার টিকেট বিক্রি হওয়ার কথা জানান, ক্ষমতাসীন দলের এক নেতা।
এছাড়া খেলা চলাকালীন রিকাবিবাজার পয়েন্ট থেকে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া, মদনমোহন কলেজে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থাসহ সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকার বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়।
২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে এই স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-নেপালের মধ্যে অনুষ্ঠিত ম্যাচে অতিরিক্ত টিকেট বিক্রি করায় স্টেডিয়ামের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকেন দর্শকরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে এবার বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল টুনামেন্টে নিরাপত্তা পরিকল্পনায় নিয়োজিত বাফুফের উচ্চ পর্যায়ের সদস্যরা ভেন্যু পরিদর্শন করেন।
এ সময় দর্শক ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি টিকেট বিক্রি না করার ব্যাপারে স্থানীয় প্রতিনিধিদের সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮,২০১৫