জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: নিজের সন্তানের স্বাভাবিক মৃত্যুতে খালেদা জিয়াকে যদি ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখতে হয়, তাহলে যাদের আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে তাদের মায়ের শোক কেমন হতে পারে? এটা কি তিনি উপলদ্ধি করতে পারেন?
বুধবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে কুমিল্লা-৯ আসনের সদস্য মো. তাজুল ইসলামের সম্পূরক প্রশ্নের উত্তর প্রদানকালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী এ প্রশ্ন রাখেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার (খালেদা) ছেলে মারা গেছে।
খালেদা জিয়ার প্রতি প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার ছেলের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে, তাতেই তার কেমন লাগছে! তাতেই তাকে ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে। এই স্বাভাবিক মৃত্যুতে যদি তাকে ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখতে হয়, তাহলে যাদের পুড়িয়ে মারা হচ্ছে তাদের মায়ের ব্যথা কী? সেটা কি তিনি (খালেদা) বুঝবেন না?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছি তাকে বুঝাতে। আমি নিজে ফোন করে কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম। কী ব্যবহার করেছিলেন সেটা সবারই জানা। তার ছেলে যখন মারা গেল, আমি সমবেদনা জানাতে গিয়েছিলাম। কিন্তু তারা গেটে তালা মেরে রেখেছিল। আমি কোনো কিছুর চিন্তা করিনি। নিরাপত্তার কথাও চিন্তা করিনি। আমি যখন সেখানে যাই, বড় গেট বন্ধ দেখি। এরপর ছোট গেট দিয়ে যেতে চাইলাম, পরে জানতে পারলাম ছোট গেটটিও বন্ধ। আমাদের দেশে এ ধরনের ব্যবহার আর কেউ করেছে কি না আমার জানা নেই।
শেখ হাসিনা বলেন, খালেদার নেতৃত্বে বিএনপি-জামায়াত যেভাবে মানুষ পুড়িয়ে মারছে, নাশকতা চালাচ্ছে- এ ধরনের জঘন্য কাজ আর সহ্য করা যায় না।
এর বিরুদ্ধে দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান জানান তিনি।
স্থানীয় জনগণ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে প্রত্যেক এলাকায় পাহারা বসানোর তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী। যেন আগামী সময়ে এ ধরনের নাশকতা আর কেউ করতে না পারে।
এসময় তিনি বলেন, গত ৫ জানুযারির নির্বাচনের পর দেশ ভালোভাবেই চলছিল। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আমরা উন্নয়ন কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু বলা নেই কওয়া নেই, গত ৫ জানুয়ারি থেকে আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়াও, ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে। তাদের এই নাশকতায় মানুষ আজ অতিষ্ট। একটা দেশকে কেউ এভাবে ধ্বংস করতে পারে? তারা আবার রাজনীতি করে, রাজনৈতিক দলের নেতা।
অপর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধামন্ত্রী বলেন, জেলা আদালতের বিচারকদের পদ মর্যাদা যদি সচিব পদ মর্যাদার হয়, তাহলে উচ্চ আদালতের বিচারপতির মর্যাদা রাষ্ট্রপতির উপরে চলে যাবে। এতে প্রশাসনে সমন্বয়হীনতা তৈরি হবে। আদালত যদি নিজেকে লাভবান করে, তাহলে তা সমীচীন হবে না।
প্রধানমন্ত্রী গঙ্গা ব্যারেজ প্রসঙ্গে আরেকটি প্রশ্নের জবাবে বলেন, ভারতের সঙ্গে আলোচনা করে গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণ করা হবে। বিষয়টা সময়সাপেক্ষ। আমাদের নদীগুলোতে পানিপ্রবাহ নিশ্চিত করার বিষয় আছে। সে কারণে প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে আলোচনা করেই এ ব্যারেজ ইনশাআল্লাহ আমরা করবো।
** আর একটি পেট্রোল বোমার নির্দেশ দিলেই প্রতিরোধ
** সাধারণ মানুষ আইন মানলেও, ভিআইপিরা মানেন না
** নিজ দলীয় এমপি তাজুলকে সর্তক করলেন প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৫