ঢাকা, রবিবার, ২৮ পৌষ ১৪৩১, ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ১১ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

গাড়ি আছে যাত্রী নেই, নামমাত্র যাচ্ছে দূরপাল্লার বাস

নাজিম উদ্দিন খান লিয়ন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৫
গাড়ি আছে যাত্রী নেই, নামমাত্র যাচ্ছে দূরপাল্লার বাস ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা চলমান অবরোধ কর্মসূচির ২৩তম দিনে রাজধানীর সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে সকালে দূরপাল্লার বাস ছেড়ে গেলেও সংখ্যায় ছিল খুবই কম।

অবরোধের কারণে যাত্রী না থাকায় সব বাস ছেড়ে যেতে পারেনি বলে জানিয়েছেন সায়দাবাদ বাস টার্মিনালের পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।


 
বুধবার  (২৮ জানুয়ারি) সকালে সায়দাবাদ বাস টার্মিনালে সরেজমিন এ তথ্য পাওয়া যায়।

সৌদিয়া পরিবহনের (ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-রাঙামাটি-কাপ্তাই) সায়েদাবাদ শাখার কাউন্টার মাস্টার আব্দুর রহিম বাংলানিউজকে জানান, শীতকালকে বলা হয় বাস-মালিকদের ব্যবসার মৌসুম। এই সময় যাত্রীর চাপে আমাদের ঘুম হারাম হওয়ার কথা। কিন্তু অবরোধের কারণে এখন যাত্রীই পাই না।  

তিনি জানান, স্বাভাবিক দিনগুলোতে সায়েদাবাদ টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন তাদের ৩০টা গাড়ি ছেড়ে যায়। কিন্তু হরতাল-অবরোধের কারণে  এখন সারাদিনে ৫টা গাড়িও যায় না। গাড়ি প্রস্তুত, কিন্তু যাত্রী নেই।

তবে সকালে যাত্রীর চাপ না থাকলেও বিকেলে যাত্রীর চাপ কিছুটা বাড়ে বলে জানান তিনি।

হানিফ পরিবহনের (ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-সিলেট) সায়দাবাদ শাখার কাউন্টার মাস্টার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর ও মোহাম্মদ আলম বাংলানিউজকে বলেন,  স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতিদিন ঢাকা থেকে ৮০ থেকে ১০০টা গাড়ি ছেড়ে যায়। কিন্তু অবরোধের কারণে সেটা এখন ২০ থেকে ২৫টায় নেমে এসেছে।

কারণ হিসেবে তারা একই কথা জানালেন- যাত্রী নেই।

তারা বলেন, এভাবে চলতে থাকলে পরিবহন সেক্টরের সংশ্লিষ্ট লোকজনের পথে বসা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।

যেভাবেই হোক পরিবহনগুলো যেন স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে, সেই নিরাপত্তা সরকার যদি সঠিকভাবে দিতে পারে, তাহলে পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে তারা দাবি করেন।

মোহাম্মদ আলম বলেন, সকালের দিকে যাত্রীর চাপ না থাকলেও বিকেল ৫টা থেকে যাত্রীদের চাপ কিছুটা বাড়ে।

এ সময় দেখা যায়, সায়দাবাদ বাস টার্মিনালে অসংখ্য গাড়ি ছেড়ে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।

দিগন্ত এক্সপ্রেসের (ঢাকা-হবিগঞ্জ) পরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন,  হবিগঞ্জ থেকে ২৬ জন যাত্রী নিয়ে সকালে একটা গাড়ি এসেছে। এখন একটা গাড়ি ছাড়ছি মাত্র ১১ জন যাত্রী নিয়ে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের পথে বসা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।

ইউনিক পরিবহনের সায়াদাবাদ শাখার কাউন্টার মাস্টার মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, স্বাভাবিক দিনগুলোতে প্রতি ৩০ মিনিট পর পর গাড়ি ছাড়া হয়। কিন্তু যাত্রী না থাকার কারণে এখন একঘণ্টা পর পর ছাড়ি। তারপরও গাড়িতে অনেক সিট খালি থেকে যায়।

তিনি বলেন, টার্মিনালে অসংখ্য গাড়ি বসে রয়েছে। শুধুমাত্র যাত্রীর অভাবে গাড়ি ছাড়া যাচ্ছে না। সকালে যে কয়টা গাড়ি ছেড়ে গেছে, তাতে হাতেগোনা কয়েকজন যাত্রী ছিল মাত্র।

এদিকে, দিগন্ত এক্সপ্রেসের হবিগঞ্জগামী যাত্রী নুরুজ্জামান সেলিম বাংলানিউজকে জানান, মা প্রচণ্ড অসুস্থ। তাই, মাকে দেখতে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি। তা নাহলে এই অবরোধের মধ্যে ঢাকার বাইরে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।

ইউনিক পরিবহনের চট্টগ্রামগামী যাত্রী আরশাদ হোসেন বলেন, মাল ডেলিভারি দিয়েছিলাম। পার্টি টাকা পরিশোধের  ডেট দিয়েছে। তাই, টাকা আনতে যাচ্ছি।

দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত পরিবহন খাতে এই সংকট আরো তীব্র আকার ধারণ করতে পারে বলে মনে করছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।