ঢাকা, রবিবার, ২৮ পৌষ ১৪৩১, ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ১১ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র প্রমাণের চেষ্টা চলছে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৫
বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র প্রমাণের চেষ্টা চলছে ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: আন্দোলনের নামে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র প্রমাণের জন্য উঠে-পড়ে লেগেছে বিএনপি-জামায়াতসহ সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী। প্রতিশ্রুতির পর সাতদিন পার হয়ে গেলেও সন্ত্রাস-সহিংসতা বন্ধ করতে পারছে না সরকার।


 
শুধু তাই নয়, সরকার উগ্রপন্থী, সন্ত্রাসী রাজনীতির মোকাবেলা করতে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। ফলে বাংলাদেশ ক্রমশ একটি আত্মঘাতি রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠছে।
 
সাংবাদিক-রাজনীতিবিদ পথিক সাহার চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
 
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে সাংবাদিক পথিক সাহা স্মৃতি সংসদ। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংসদের সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সভাপতি নুহ উল আলম লেনিন।
 
‘স্বাধীনতার ৪৩ বছর: জাতির প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা আরো বলেন, বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসী-জঙ্গিবাদী গোষ্ঠী আজ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক ধারাকে শক্তিশালী করার মধ্য দিয়েই তাদের প্রতিহত করতে হবে।
 
সরকারের সমালোচনা করে বক্তারা বলেন, সরকার জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। দিনের পর দিন অবরোধ-হরতালের নামে মানুষ হত্যা করে চললেও সরকারের প্রশাসন এবং কর্তা ব্যক্তিরা এর কোনো ব্যাখ্যা বা সমাধান দিতে পারছেন না। আমরা সাধারণ মানুষ আমাদের জীবনের নিরাপত্তা চাই।
 
সভাপতির বক্তব্যে নুহ উল আলম লেনিন বলেন, আমাদের প্রত্যাশা কি এবং ভবিষ্যতে কতোটুকু প্রাপ্তি আমরা অর্জন করতে পারবো সে হিসাব-নিকাশই আমাদের করতে হবে। অনেক সঙ্কট কাটিয়েই আমরা অনেক কিছু অর্জন করেছি। এ অর্জনগুলোকে আমাদের মনে রাখতে হবে, স্বীকার করতে হবে।
 
বিএনপির আন্দোলনের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, চিরকাল দেখে এসেছি, জনগণ অধিকারের জন্য গণতন্ত্রের জন্য শাসকের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম করে এসেছে। আজ বাংলাদেশে গণতন্ত্র রক্ষার জন্য সরকারকে লড়াই করতে হচ্ছে।
 
আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াতের এ সহিংস-সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড অচিরেই বন্ধ হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে সামরিক শাসন, নেতৃত্ব শূন্যতার কারণে দেশে রাজনৈতিক সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সব ধরনের সঙ্কট কাটিয়েই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
 
পথিক সাহার পেশাগত জীবন এবং রাজনৈতিক জীবনের ওপর আলোকপাত করে বক্তারা বলেন, পেশাগত জীবনে পথিক সাহা যেমন মানুষের দুঃখ-কষ্ট, সঙ্কটকে তার লেখনির মাধ্যমে তুলে এনেছেন, তেমনি মানুষের স্বপ্নকেও তিনি তুলে ধরেছেন।
 
স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য রাজনীতিতেও যুক্ত হয়েছেন তিনি। তিনি আমৃত্যু সমতাভিত্তিক, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে গেছেন, স্বপ্নের বীজ বপন করে গেছেন। মানবতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক-জঙ্গি গোষ্ঠীকে পরাজিত করে ধর্মনিরপেক্ষ, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারলেই পথিক সাহার উপযুক্ত মূল্যায়ন করা হবে।
 
আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন, ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবির উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মনজুরুল আহসান খান, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য বিমল সেন, গণতন্ত্রী পার্টির নুরুর রহমান সেলিম, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, তেল-গ্যাস, বিদ্যুৎ-বন্দর ও খনিজ সম্পদ রক্ষা জাতীয় কমিটির কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রুহিন হোসেন প্রিন্স, পথিক সাহার বড় ভাই প্রণয় সাহাসহ সাংবাদিক ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।
 
আলোচনা সভার শুরুতেই সমবেত কণ্ঠে ‘আগুনের পরশমনি ছোঁয়াও প্রাণে’ গানটি পরিবেশন করে খেলাঘরের ক্ষুদে শিল্পীরা। তার আগে পথিক সাহার অস্থায়ী বেদিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের নেতারা। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক আশিস কুমার দে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।