ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ পৌষ ১৪৩১, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

মিরপুরে প্লাস্টিক কারখানায় আগুন, ৮ জনের মৃত্যু

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৫
মিরপুরে প্লাস্টিক কারখানায় আগুন, ৮ জনের মৃত্যু ছবি: জি এম মুজিবুর / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: রাজধানীর মিরপুর ১-এ নাসিম প্লাজার পাশে একটি প্লাস্টিক পণ্য তৈরির কারখানা ভবনে অগ্নিকাণ্ডে অন্তত আট জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া, দগ্ধ হয়েছে তিনজন, আহতও হয়েছে দু’জন।



শনিবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেল ৫টা ২৫ মিনিটে অ্যাপকো বাংলাদেশ লিমিটেড নামে ওই প্লাস্টিক পণ্য তৈরির চারতলা বিশিষ্ট কারখানার নিচতলায় বয়লার বিস্ফোরণে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। ফায়ার সার্ভিসের ২০ ইউনিটের প্রায় পৌনে দু’ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

অগ্নিকাণ্ডে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।

তিনি জানান, আগুনের খবর পাওয়ার পর পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। অগ্নিকাণ্ডে আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া, দগ্ধ হয়েছেন তিনজন এবং ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়েছেন আরও দু’জন।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান বাংলানিউজকে জানান, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বিভিন্ন স্থানে মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছড়িয়ে আছে বলে শুনেছি।

ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন) মেজর শাকিল নেওয়াজ জানান, কারখানাটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এতে কেমিকেল দ্রব্য ছিল বিধায় আগুন নেভাতে সময় লেগেছে। তদন্ত সাপেক্ষে আগুনের কারণ জানা যাবে।

প্রায় পৌনে দু’ঘণ্টা পর ৭টা ৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও দমকলকর্মী ও পুলিশ সদস্যরা তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানান মেজর শাকিল নেওয়াজ।

তিনি আরও জানান, কারখানা ভবনটি এখনও ঝুঁকিপূর্ণ। এর ভেতরে এখনও অনেক রকমের কেমিকেল দ্রব্য রয়েছে। এ কারণে হতাহতদের অনুসন্ধানে দমকলকর্মীদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে।

অ্যাপকো লিমিটেডের নিরাপত্তাকর্মী আবুল কাশেম বাংলানিউজকে জানান, শনিবার কারখানার সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত শিফটে ৭৫-৮০ জন কাজ করছিলেন।

এদিকে, অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের মধ্যে তিনজনের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। এর মধ্যে দু’জন নারী এবং অপরজনের লাশ পুরোপুরি পুড়ে যাওয়ায় পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

এছাড়া, অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ কারখানার দুই নিরাপত্তাকর্মী ও এক শ্রমিককে উদ্ধার করে ঢামেকে ভর্তি করা হয়েছে। এরা হলেন- কারখানার নিরাপত্তা প্রধান তৌহিদুল ইসলাম (৪২) ও নিরাপত্তাকর্মী কামাল হোসেন (৩৫)। এদের মধ্যে তৌহিদের শরীরের প্রায় ২৮ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে, আর ৩৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে কামালের। এ দু’জনের পর কারখানার নিচতলার শ্রমিক রবিউল ইসলামকে (২৫) দগ্ধাবস্থায় উদ্ধার করে ঢামেকে নিয়ে আসা হয়।

অ্যাপকো লিমিটেডের মালিকের নাম আনিসুজ্জামান খান। ওই কারখানায় ১৪৩ জন কর্মচারী কাজ করেন বলে জানান কারখানার নিচ তলার ফটোকপি দোকানের কর্মী জহির।

অ্যাপকো লিমিটেডের মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ মমিনুল ইসলাম টুটুল বাংলানিউজকে বলেন, আমি কারখানার বাইরে ছিলাম। বিকেলে হঠাৎ বিকট শব্দ শুনি। কাছে গিয়ে দেখি বয়লার বিস্ফোরণে আমাদের কারখানায় আগুন লেগেছে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের নিয়ন্ত্রণকক্ষের ডিউটি অফিসার ফরহাদ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। প্রায় পৌনে দু’ঘণ্টা চেষ্টার পর ‍আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে অর্থ সহায়তা
অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারকে অর্থ সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আসলামুল হক। তিনি জানান, ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা এবং আহতদের প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।

তদন্ত কমিটি গঠন
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস। ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান জানান, এ কমিটি আগামী তিনদিনের মধ্যে তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দেবে। আশা করা যায়, অগ্নিকাণ্ডের মূল কারণ জানা যাবে।



** মিরপুরে বহুতল মার্কেটে আগুন, কয়েকজন নিহতের আশঙ্কা

বাংলাদেশ সময়: ১৯২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৫/আপডেট ১৯২৫ ঘণ্টা/ ১৯৪৪ ঘণ্টা/আপডেট ২০২১ ঘণ্টা/আপডেট ২১০০ ঘণ্টা/আপডেট ২১৪৫ ঘণ্টা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।