বগুড়া: জেলার পুলিশ সুপার বাস, ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মালিক ও শ্রমিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার আশ্বাস দিলেও স্বাভাবিক হচ্ছে না বগুড়ার যান চলাচল। মালিকপক্ষই অবরোধ-হরতাল আতঙ্কে রাস্তায় গাড়ি না নামানোয় এ অবস্থা কাটছে না।
রোববার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জেলার ঠনঠনিয়া ও চারমাথা আন্তঃজেলা বাস ও ট্রাক টার্মিনাল সরেজমিনে ঘুরে এমনটি জানা গেছে।
যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের যথেষ্ট পদক্ষেপ সত্ত্বেও সড়কে যানবাহনের সংখ্যা আশানুরূপ না থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন যাত্রীসহ সংশ্লিষ্টরা। জনসাধারণ মনে করছে, এতকিছুর পরেও যান চলাচল স্বাভাবিক না হওয়াটা অনাকাঙ্ক্ষিত।
শহরের ঠনঠনিয়া এলাকার বাস টার্মিনালে গিয়ে এসআর ট্রাভেলস, শ্যামলী পরিবহন, একতা পরিবহনসহ ঢাকাগামী কয়েকটি কাউন্টারের লোকজনের সঙ্গে কথা বললে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, অবরোধের আতঙ্ক সবার মধ্যেই রয়েছে। এ কারণে স্বাভাবিকভাবে কেউ গাড়ি সড়কে নামাতে সাহস করছেন না। তবে, রাতে বেলায় পুলিশ প্রহরায় কিছু বাস ঢাকায় যাচ্ছে এবং ঢাকা থেকে বগুড়ায় আসছে।
চারমাথা টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, পুলিশি প্রহরা থাকলেও অধিকাংশ কাউন্টার বন্ধ। সেখান থেকে পণ্যবাহী কিছু ট্রাক ও নিম্ন মানের যাত্রী পরিবহন চলাচল করছে।
বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল লতিফ মন্ডল বাংলানিউজকে জানান, দিনে বাস কম চললেও বেশ কয়েকদিন যাবত পুলিশি প্রহরায় রাতে ঢাকা-বগুড়া রুটে যাত্রীবাহী গাড়ি চলাচল করছে। তাছাড়া, সড়কে গাড়ি নামলে শ্রমিকরা কাজ করবে।
আন্তঃজেলা ট্রাক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল মান্নান মন্ডল বলেন, অবরোধের কয়েকদিন পর থেকেই ঝুঁকি নিয়ে হলেও ট্রাক চলাচল করছে।
বিআরটিসি বগুড়া অঞ্চলের পরিচালক শুভাশীষ পোদ্দার লিটন বাংলানিউজকে জানান, কিছুটা কম হলেও বগুড়া থেকে দূরপাল্লার কয়েকটি গাড়ি চলাচল করছে।
বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপের সভাপতি আকতারুজ্জামান ডিউক জানান, প্রশাসনের সহযোগিতার আশ্বাস সত্ত্বেও বেশকিছু ভাল মানের পরিবহনের মালিকরা সড়কে গাড়ি বের করতে ভয় পাচ্ছেন। এ কারণে সড়কে এখনও যান চলাচল স্বাভাবিক করা যায়নি। তবে চেষ্টা চলছে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে।
এসআর ট্রাভেলসের পরিচালক ও বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রভাবশালী নেতা বগুড়া-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জি.এম. সিরাজ দুই দফা সময় নিয়েও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
বগুড়ার সহকারী পুলিশ সুপার (সদর) ও জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গাজিউর রহমান বাংলানিউজকে জানান, মালিক গাড়ি না বেড় করলে তাদের কী করার আছে? সড়কে গাড়ি বের করলে নিরাপত্তা দিতে যা প্রয়োজন, জেলা পুলিশের তার সবটুকুই প্রস্তুতি রয়েছে।
নিরাপদে যানবাহন চলাচল নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গত ৩০ জানুয়ারি দুপুরে নিজের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাস, ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মালিক ও শ্রমিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বগুড়ার পুলিশ সুপার মো. মোজাম্মেল হক। সভায় উপস্থিত সকলেই ঢাকাগামী বাস রাতের পরিবর্তে দিনের বেলা বেশি করে চালানোর পক্ষে মত দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১৫