শেরপুর (বগুড়া): অতীত জীবনের পাপ মোচনসহ পূণ্যলাভের আশায় বগুড়ার শেরপুরের মা ভবানীর মন্দিরে মাঘী পূর্ণিমা উৎসব উদযাপিত হয়েছে।
মাঘী পূর্ণিমা উপলক্ষে মঙ্গলবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দিনব্যাপী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ৫১টি পীঠস্থানের অন্যতম ঐতিহাসিক এ মন্দিরস্থলে বসেছিল আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত পূণ্যার্থীদের মিলনমেলা।
মা ভবানীপুর মন্দির সংস্কার, উন্নয়ন ও পরিচালনা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব কল্যাণ প্রসাদ পোদ্দার বাংলানিউজকে জানান, ২০ দলের ডাকা অবরোধ ও হরতালের কারণে এবার ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলংকাসহ দেশের দূরবর্তী জেলাগুলো থেকে পূণ্যার্থীরা আসতে পারেননি।
এছাড়া এ উৎসবে প্রতিবারই প্রায় অর্ধলাখ দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে।
এদিকে, দিনটিকে ঘিরে সকাল থেকেই হাজার হাজার নারী পুরুষ পূণ্য লাভের আশায় মন্দিরস্থলে সমবেত হন এবং শাঁখা পুকুরে পূণ্যস্নান করেন।
প্রতিবছর মাঘ মাসে পূর্ণিমার চাঁদের মাঘী পূর্ণিমার পঞ্জিকা তিথি অনুযায়ী এ পূণ্যস্থানে মাঘী পূর্ণিমা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
ধর্মীয় শাস্ত্রমতে, মাঘী পূর্ণিমার দিনে এ স্থানে অংশ নিলে তার অতীত জীবনের পাপ মোচনসহ পূণ্যলাভ হয়। আর সেই আশায় হাজার হাজার ভক্ত নর-নারী ও শিশু কিশোর মন্দিরের শাঁখা পুকুরে স্নান করেন।
সেইসঙ্গে ঐতিহাসিক এই মন্দিরে রতি প্রতিমা দর্শন, পূজাঅর্চনা, ভোগদান, অর্ঘদান, মাতৃদর্শন করেন ভক্তরা। মন্দিরের পক্ষ থেকে ভক্তদের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
সোমবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাত থেকেই তিথি অনুযায়ী মা ভবানীর মন্দিরে মাঘী পূর্ণিমার উৎসবে যোগ দিতে পূণ্যার্থীরা আসতে থাকেন। এজন্য অসংখ্য দর্শনার্থী মন্দির এলাকা ও আত্মীয়স্বজনের বাসাবাড়িতে রাতযাপন করেন।
মা ভবানীপুর মন্দির সংস্কার, উন্নয়ন ও পরিচালনা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নিমাই ঘোষ বাংলানিউজকে জানান, যুগ যুগ আগে থেকেই এই ধর্মীয় তিথি উৎসব পালন হয়ে আসছে। প্রতিবছরই এ উৎসবে প্রায় অর্ধলাখ লোকের সমাগম ঘটে।
রায়গঞ্জ থেকে আসা মুক্তিরাণী, নিপা রাণী বাংলানিউজকে বলেন, মায়ের দর্শন নিতে এখানে এসেছি। মনের আশা বাসনা পূরণের জন্য স্নান শেষে মায়ের কাছে আর্শিবাদ করেছি।
সিরাজগঞ্জের ভূঁইয়াগাতির জোৎস্না রানী বাংলানিউজকে বলেন, এখানে এলে দেহ-মন পবিত্র হয়। তাই মায়ের মন্দিরে এসেছি।
মন বাসনা পূরণ হবে-এমন আশা নিয়ে মায়ের মন্দিরে এসেছি বলে জানান চান্দাইকোনার করুণা রাণী সাহা।
অপরদিকে, এ উপলক্ষে প্রতিবছর মা ভবানী মন্দিরের চারপাশে মেলা বসে। মেলায় মিষ্টান্ন সামগ্রীসহ পাওয়া যায় রকমারি খাবার। সেই সঙ্গে শিশুদের বিভিন্ন খেলনা, ইতিহাস ঐতিহ্যখ্যাত বই পুস্তকও মেলায় পাওয়া যায়।
এছাড়া প্রতিবারের মতো এবারও শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মীয় বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান উদযাপন করার সুবিধার্থে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবক দলগঠন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৪৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০১৫