জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: খালেদা জিয়া উন্মাদ হয়ে পড়েছেন। তিনি ক্ষমতার জন্য হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন।
বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, আবদুর রহমান, অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম, বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী ও বিএনএফ প্রেসিডেন্টের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট সাপের মতো হিংস্র ফনা মেরে দেশকে বিষাক্ত করে ফেলছেন। তার কাছে কোমলমতি ছেলে-মেয়েদের জীবনও নিরাপদ নয়। এই ছেলে-মেয়েদের ওপর তিনি বোমা মারতে দ্বিধাবোধ করবেন না। আর তার প্রতি আমাদের আস্থাও নেই। এ কারণেই এসএসসি পরীক্ষা পিছিয়ে দিতে হয়েছে। কেননা, আমরা একজন শিক্ষার্থীর জীবনকেও হুমকির মুখে ঠেলে দিতে পারি না। তার পরিকল্পনা অত্যন্ত ধ্বংসাত্মক। দেশ ও সমাজকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা নিয়ে এসব করছেন তিনি।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে সংসদ নেতা বলেন, বিএনপি নেত্রী মানসিক বিকৃতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। তাকে বিশ্বাস করতে পারি না। তাই, এসএসসি পরীক্ষার্থীদের আগুনের মুখে ঠেলে দেওয়া যায় না। এ কারণে পরীক্ষার সময় পিছিয়ে দিতে হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিষয়ে আশাবাদ প্রকাশ করে বলেন, পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ায় কিছুটা সমস্যায় পড়েছে শিক্ষার্থীরা। তবে আমি নিশ্চিত, শিক্ষার্থীরা সব পরিস্থিতি মোকাবেলা করেই পরীক্ষা দিয়ে ভালোভাবেই পাস করবে। কারণ, আমাদের ছেলেমেয়েরা এখন অনেক মেধাবী। দেশের একজন শিক্ষার্থীর জীবনও আমার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
দেশের তরুণ প্রজন্ম উচ্চশিক্ষায়, তথ্য-প্রযুক্তির জ্ঞান নিয়ে শিক্ষিত হয়ে গড়ে উঠুক, সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সব ছেলে-মেয়ে যাতে স্কুলে যায়, সে জন্য বিনামূল্যে পহেলা জানুয়ারিতেই বই বিতরণ করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার (খালেদার) ছেলের বউ (জোবায়দা রহমান) ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ছেলের চেয়ে দেশ বড়। ’ কিন্তু যে মা নিজের ছেলেকে ভালোবাসে না, সে কীভাবে দেশকে ভালোবাসবে! নিজের ছেলেকে না ভালোবাসলে, দেশকে ভালোবাসা যায় না। তার ছেলে (আরাফাত রহমান কোকো) অনেকদিন ধরেই অসুস্থ ছিল। মাত্র ৪/৫ ঘণ্টায় মালয়েশিয়ায় যাওয়া যায়। দেখলাম না, ওই ৪/৫ ঘণ্টার যাত্রা করে উনি (খালেদা জিয়া) মালয়েশিয়ায় গিয়ে অসুস্থ ছেলের পাশে গেছেন, ছেলের জন্য দু’ফোটা চোখের জল ফেলেছেন, অসুস্থ ছেলেকে দেখতে গেছেন!
খালেদা জিয়ার সিঙ্গাপুর সফর প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, সিঙ্গাপুরে ছেলেদের সঙ্গে তার (খালেদা) দেখা হয়েছে। তিনি সিঙ্গাপুর কোথায় গিয়েছিলেন, সব তথ্য আমার কাছে আছে। কোন কোন শপিংমলে ঘুরেছেন, শাড়ি-চুড়ি কিনেছেন, সেসব ছবি আমার কাছে আছে। চাইলে আমি সবাইকে দেখাতে পারবো।
খালেদার সঙ্গে ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাতের বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো বলেন, ছেলে (কোকো) মারা যাওয়ার পর এক সপ্তাহ না যেতেই তিনি (খালেদা জিয়া) মাথায় ঘোমটা দিয়ে আল্লাহ-রাসুলের নাম না নিয়ে আঁচল ফেলে দিয়ে বসেছিলেন।
নতুন নতুন শাড়ি, ব্লাউজ পরে বসে ছিলেন। কাকে দেখানোর জন্য তিনি এগুলো করেছিলেন! সবাই সেখানে গেছে তাকে দেখার জন্য। তারা কী দেখেছেন। তারা কি দেখেছেন তিনি শোকাহত? আসলে তিনি পুত্রশোকে কাতরও নন, পাথরও নন।
বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলের টকশো সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা টকশো করেন, তাদের কবে শুভবুদ্ধির উদয় হবে, তা আমি জানি না। টকশোওয়ালাদের প্রধান টার্গেটই তো আমি। তাদের বুদ্ধির গোড়ায় ধোঁয়া কে দেবে!
তিনি বলেন, অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতায় আসলে তাদের সুবিধা হয়। তাদের কদর বাড়ে। তাই, বসে থাকেন কখন অসাংবিধানিক সরকার আসবে।
দৃঢ়তার সঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, দুই/চারজন সন্ত্রাসীর জন্য মানুষের জীবন ও দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে, গায়ে একবিন্দু রক্ত থাকতে তা হতে দেবো না। সরকারও হতে দেবে না।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০১৫