সাভার (ঢাকা) : চলমান হরতাল-অবরোধের সহিংসতায় গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বের হতেই মন চায় না! কখন যেন পেট্রোল বোমায় প্রাণ যায়। জান থাকে ভাই ঠোঁটের মাথায়।
শুক্রবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডে ধসে পরা রানা প্লাজার সামনে সারি-সারি গাড়ি পার্ক করে দাঁড়িয়ে থাকা শহিদের মতো একাধিক প্রাইভেটকার চালক তাদের বর্তমান অবস্থা নিয়ে বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলেন।
অবরোধ- হরতালে সহিংসতার প্রধান শিকার পরিবহন খাত। নাশকতাকারীরা পেট্রোল বোমা ছুড়ে প্রাইভেটকার, বাস-ট্রাক, সিএনজি অটো রিকশায় আগুন ধরিয়ে দিচ্ছেন। এতে হতাহত হচ্ছেন সাধারণ যাত্রীসহ এসব পরিবহনের চালক-হেলপাররা। আর এসব ঘটনায় সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে থাকেন যানবাহনের চালকরা। রাস্তায় গাড়ি নিয়ে বের হলেই মনে হয় কখন যেন প্রাণ যায়। তবুও এ শঙ্কা আর ভয় নিয়েই চালাতে হয় গাড়ি।
প্রাইভেটকার চালক মো. জগলু বাংলানিউজকে বলেন, টানা হরতাল-অবরোধে মানুষ দূরপাল্লার যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছেন। প্রতিবছর শীতে কক্সবাজার যাওয়া হয় বেশ কয়েক বার। আর এ বছর একবারও যাওয়া হয়নি। কারণ পট্রোল বোমা আতঙ্কে ভুগছেন সবাই। তার পরও ভাড়া পাইলে যাই। কী করবো ইনকাম একবারেই নাই।
বাজার বাস-স্ট্যান্ডের আরেক প্রাইভেটকার চালক আনিস বাংলানিউজকে বলেন, দেশ যখন শান্ত ছিল, তখন প্রতি মাসে গড়ে ৬০-৭০ হাজার টাকা আয় হতো। আর এখন আয়ের পরিবর্তে খরচই উঠছে না। গাড়ির মালিককে আগের ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া দিতে হয়। কারণ কখন যে তার গাড়ি পুড়ে যায়।
গেন্ডা বাস-স্ট্যান্ডে সোহেল রানা নামে প্রাইভেটকার চালক বাংলানিউজকে জানান, আগের তুলনায় রাস্তায় গাড়ি কমার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীর সংখ্যাও কমে গেছে। মূলত বিনোদনের যাত্রীদের নিয়েই তার চলাচল। তিনি বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিনোদন প্রেমী যাত্রীতো দূরের কথা জরুরি কাজ ছাড়া অন্য কোনো যাত্রীই পাওয়া যায় না।
বছির নামে আরো এক প্রাইভেটকার চালক বাংলানিউজকে বলেন, ভাই এখন শুধু দিনে গাড়ি চালাই। রাতে চালাইলে একটু ভাড়া বেশি পাওয়া যায়। রাতে গাড়ি চালানো মালিকের নিষেধ আছে। সন্ধ্যা হলেই মালিকরে গাড়ি বুঝাইয়া দিতে হয়। বর্তমানে এমনও দিন যায় যে পকেটে একটাকা নিয়েও বাসায় ফিরতে পারি না। ভাড়া না পাওয়ায় স্ট্যান্ডেই অলস সময় পার করতে হয়।
এসব চালকরা চলমান সহিংসতা দ্রুত বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময় : ১৭৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৫