ঢাকা, রবিবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

চীনা রাষ্ট্রপতির সফরে এসপিএম চুক্তি

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ. স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৫
চীনা রাষ্ট্রপতির সফরে এসপিএম চুক্তি

ঢাকা: রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং এর বাংলাদেশ সফরকালেই গভীর সমুদ্রে সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) স্থাপন চুক্তি স্বাক্ষর করতে চায় চীন।   যদিও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনেক আগেই এ চুক্তি সইয়ের প্রস্তাব করা হয়েছিল।



রোববার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে চীনা প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এসএমপি নির্মাণ সংক্রান্ত বৈঠকে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনায় আসে চুক্তির বিষয়টিও।

এ প্রসঙ্গে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের (ইআরএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক গাজী মো. আলী আফজাল বাংলানিউজকে বলেন, আলোচনা বেশ ফলপ্রসু হয়েছে। বৈঠকে চীনা প্রতিনিধি দল ইঞ্জিনিয়ারিং প্রকিউরমেন্ট কনস্ট্রাকশন (ইপিসি) বিষয়ে বেশ আগ্রহ দেখিয়েছে।

কিন্তু বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আরও আগেই চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তাব করা হয়েছিল বলে জানান তিনি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চীনা রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং সফরসূচি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে এপ্রিলের শেষ অথবা মে মাসের প্রথমে বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন তিনি।

ই‌আরএল সূত্র জানায়, ইপিসি ঠিকাদার হিসেবে চাইনিজ পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন ব্যুরোর (চাইনিজ সিপিপিবি) সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। ২০১৭ সালের শেষ নাগাদ বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার উপযোগী করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এসএমপি নির্মাণ হলে প্রতি টন ক্রুড অয়েল আমদানিতে প্রতি ব্যারেলে ৪ ডলারের মতো পরিবহন খরচ কমে যাবে।

এছাড়া জাহাজ থেকে ক্রুড অয়েল আনলোডিংয়েও জটিলতা দূর হবে। পাশাপাশি জরিমানা দেওয়া থেকে রক্ষা পাবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)।

সূত্র জানায়, এসপিএম প্রকল্পে ৪৪৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় হবে। তবে অপারেশনে যাওয়ার ৬ থেকে ৭ বছরের মধ্যে বিনিয়োগ উঠে আসবে।

কক্সবাজার জেলার মহেশখালীর দক্ষিণে গভীর সমুদ্রে থাকছে এসপিএমের প্রধান কেন্দ্র। আর সেখান থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরত্বে স্থাপন করা হবে রিজার্ভার ট্যাংক। এ ১৭ কিলোমিটার এলাকায় থাকছে ৩৬ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপ।

গভীর সমুদ্রে মাদার ভ্যাসেল থেকে ক্রুড অয়েল সরাসরি পাইপের মধ্য থেকে রির্জাভারে আসবে। এ রির্জাভারের ধারণ ক্ষমতা নির্ধারণ করা হয়েছে আড়াই লাখ মেট্রিক টন।

স্টোরেজ ট্যাংকার থেকে ইআরএল পর্যন্ত স্থলভাগে (অবসোরে) ৬৩ কিলোমিটার এবং জলপথে (অনসোরে) ৩০ কিলোমিটার মোট ৯৩ কিলোমিটার ডবল পাইপ লাইন স্থাপন করা হবে।

গভীর সমুদ্রে অবস্থান নেওয়া মাদার ভ্যাসেল থেকে লাইটারেজের মাধ্যমে ইস্টার্ন রিফাইনারি জেটিতে আনা ক্রুড অয়েল। আর সেখান থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে তা নেওয়া হয় ইআরএল-এর স্টোরেজে।

এতে অনেক সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ অন্যান্য কারণে মাদার ভ্যাসেল থেকে ক্রুড আনলোডে বিলম্ব হয়। মোটা অংকের লোকসানও দিতে হচ্ছে বিপিসিকে।
কিন্তু এসপিএম নির্মিত হলে অনিশ্চয়তা দূর হয়ে সক্ষমতা বাড়বে ইস্টার্ন রিফাইনারির।

বছরে সাড়ে পাঁচ মিলিয়ন টন অর্থাৎ সাড়ে ৫৫ লাখ টন ক্রুড অয়েল হ্যান্ডেলিং করতে পারবে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এ প্রতিষ্ঠান।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বর্তমান সরকারের আগের মেয়াদে এসপিএম নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। ওই সময় মাত্র একটি পাইপ লাইন স্থাপনের কথা ছিল। যার ব্যয় ধরা হয়েছিল ১২৯ মিলিয়ন ডলার

পরবর্তীতে স্টোরেজ থেকে ৯৩ কিলোমিটার ডবল পাইপ বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হলে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৪৪৬ মিলিয়ন ডলারে।

প্রথমে ইসলামিক উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিবি) প্রকল্পে অর্থায়নের কথা থাকলেও ব্যয় বাড়ার কারণে পিছু হটে প্রতিষ্ঠানটি।

এখন চীনা এক্সিম ব্যাংকের অর্থায়নে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাংলাদেশকে।

বাংলাদেশ সময়: ২২০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।