ঢাকা, রবিবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

সংকট সমাধান নিজেদেরকেই করতে হবে

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৫
সংকট সমাধান নিজেদেরকেই করতে হবে ছবি: নাজমুল হাসান/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: চলমান রাজনৈতিক সংকটের সমাধান বাংলাদেশের নিজেদেরই করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নবনিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত  মার্শা স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট।

এক্ষেত্রে বিদেশি বন্ধুদের সহায়তা চাওয়া হলে তারা সহায়তা করতে প্রস্তুত আছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।



ঢাকায় যোগ দেওয়ার পর মঙ্গলবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) আমেরিকান ক্লাবে আয়োজিত প্রথম সংবাদ সম্মেলনে চলমান সংকট নিরসন প্রসঙ্গে এমন মন্তব্য করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।

বার্নিকাট বলেন, আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কোনো নির্দিষ্ট শক্তি বা দলকে সমর্থন করবে না। আমাদের লক্ষ্য হল সব বাংলাদেশিদের সঙ্গে কাজ করা।

রাজনৈতিক অচলাবস্থা সমাধানে সংলাপ প্রসঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, এই সমস্যা  অভ্যন্তরীণভাবে সমাধান করতে সক্ষম বাংলাদেশ। আমার বিশ্বাস অচিরেই রাজনৈতিক সংকট নিরসন করে বাংলাদেশ আরো এগিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য সহিংস কর্মকাণ্ডের কোনো যৌক্তিকতা নেই। এসব সহিংস কর্মকাণ্ডের কড়া ভাষায় নিন্দা জানায় যুক্তরাষ্ট্র। সব পক্ষকেই সন্ত্রাস বন্ধের জন্য ভূমিকা পালন করতে হবে এবং অহিংস ও দায়িত্বশীলভাবে রাজনৈতিক মত প্রকাশ করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন তিনি। পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষভাবে গুরুত্ব পাবে বলেও উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত। এ ধরণের সহিংসতা চলমান থাকলে অনেক সময় জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিতে পারে উল্লেখ করে সবার এ সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসার পরামর্শ দেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে মার্শা বার্নিকাট লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধি ও জোরদার করা আমাদের মূল আগ্রহ।

সকল দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তন তার কাজে বিশেষভাবে গুরুত্ব পাবে বলে তিনি জানান।
বার্নিকাট বলেন, বাংলাদেশের সব বন্ধু রাষ্ট্রই চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। আর বাংলাদেশ চাইলে তারা সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।

গণতন্ত্রের জন্য আকাঙ্ক্ষা বাংলাদেশের মানুষের মজ্জাগত উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। সেই বিশ্বাস থেকেই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আমরা এগিয়ে নিতে চাই।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সমাজকে গণতান্ত্রিক সমাজ। এ দেশের মানুষ গণতান্ত্রিক উপায়ে শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যার সমাধানে এই সুবিধা কাজে লাগাবে বলেই আমার বিশ্বাস। যাতে সবাই তাদের মত প্রকাশ করতে পারে।

রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগের ছাড়পত্র পাওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক সিনেট কমিটির শুনানিতে বার্নিকাট ৫ জানুয়ারির ওই নির্বাচনকে ‘ত্রুটিপূর্ণ’ বলে উল্লেখ করেন। তখনই তিনি বাংলাদেশে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপে বসারও আহ্বান জানান।
তার সেই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বর্তমান অবস্থান জানতে চাইলে মার্শা বলেন, বাংলাদেশের ওই নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সবারই জানা।

সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র মনিকা শাই ও প্রেস সেকশনের প্রধান মেরিনা ইয়াসমিন উপস্থিত ছিলেন।

পেশাদার কূটনীতিক বার্নিকাট বাংলাদেশে আসার আগে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মানবসম্পদ বিষয়ক ব্যুরোতে উপ-সহকারী সচিব পদে দায়িত্বে ছিলেন। ২৭ বছরের কূটনৈতিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বার্নিকাট দক্ষিণ এশিয়া নিয়েও কাজ করেছেন।

সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনার স্থলাভিষিক্ত হয়ে ২৫ জানুয়ারি ঢাকায় আসেন তিনি। এরপর ৪ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পরিচয়পত্র পেশ করেন।   প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গেও সাক্ষাত করেছেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৫/আপডেট: ১৮১০ ঘণ্টা.

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।