দুর্ঘটনাস্থল (মাঝপদ্মা) থেকে: মৃত নানির লাশ দেখতে গিয়ে দুই সন্তান উৎসব (০৭) ও দুই মাস বয়সী মেয়ে উস্নকে নিয়ে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে লঞ্চ এমভি মোস্তফা-৩ ডুবিতে নিখোঁজ হন রুমা।
রোববার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাতে স্ত্রী ও দুই সন্তানের লাশ নিতে এসে কান্নাজড়িত কণ্ঠে প্রলাপ করতে থাকেন রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলা কাঁটাখালী এলাকার লিটু।
মানিকগঞ্জ জেলার ডিবি পুলিশের কনেস্টবল লিটু বলেন, সকালে নানি শাশুড়ির মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে স্ত্রী ও সন্তানদের পাঠানো হয়। ওদের লঞ্চে দিয়ে আমি ফেরিতে যাই।
তিনি বলেন, আমি অল্পের জন্য লঞ্চে উঠতে পারিনি। পরে ফেরিতে রওয়ানা দেই। আমার চোখের সামনেই ডুবলো লঞ্চ, দেখতে দেখতে স্ত্রী ও দুই বাচ্চাকে হারালাম। আমি কী নিয়ে বেঁচে থাকবো... কথাগুলো বলতে বলতেই অজ্ঞান হয়ে যান তিনি।
রুমার খালাতো ভাই দৌলতদিয়া মডেল হাই স্কুলের শিক্ষক আবুল কাশেম বাংলানিউজকে বলেন, কিভাবে এই শোক সহ্য করবো। বাড়িতে নানির লাশ নদীতে বোন ও ভাগ্নে-ভাগ্নিদের লাশ।
লাশের অপেক্ষায় এখন পদ্মাপাড়ে বসে আছি। সারা রাত পার হবে এভাবে। তবে জানি না বোন ভাগ্নে ও ভাগ্নি’র লাশ পাবো কি-না।
কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে নৌদুর্ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে আবুল কাশেম বলেন, লঞ্চ চালক ও কার্গো চালকের অসুস্থ প্রতিযোগিতার কারণে এতোগুলো সাধারণ মানুষকে জীবন দিতে হলো।
পাটুরিয়া থেকে দৌলতদিয়া যাওয়ার পথে রোববার দুপুরে সারবাহী কার্গো’র ধাক্কায় শতাধিক যাত্রী নিয়ে এমভি মোস্তফা-৩ নামে ওই লঞ্চ ডুবে যায়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৪৩ মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২২১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৫