ঢাকা: আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কী ভুলিতে পারি... গান গেয়ে ২১ ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় শহীদ মিনারে লাখো মানুষের ঢল নেমেছিলো। ফুলে ফুলে খালি পায়ে শ্রদ্ধায় অবনমিত হয়েছিলো শহীদদের প্রতি।
২২ তারিখ দিবাগত রাতের সঙ্গে ২১ ফেব্রুয়ারি ব্যবধান কেবল একদিনের। একদিন আগেও যেখানে শহীদ মিনারের সিঁড়িগুলো নানা রঙে ফুলে ফুলে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে, সেখানে একই সিঁড়িতে পড়ে থাকতে দেখা যায় ওয়ান টাইম ইউজ চায়ের কাপ। স্ব-যত্নে আঁকা হয়েছিলো যেখানে আল্পনা, সেখানে বিস্কিটের উচ্ছিষ্ট প্যাকেটের অংশ পড়ে রয়েছে। কোথাও পড়ে আছে অসংখ্য ব্যবহৃত মুড়ির ঠোঙাসহ খাবারের উচ্ছিষ্ট অংশ। ময়লা আবর্জনায় জরাজীর্ণ অবস্থা দেখা যায় ২২ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে।
২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনার এলাকার পাদদেশ থেকেই যেখানে জুতা খুলে প্রবেশ করার নিয়ম, সেখানে একদিনের ব্যবধানেই তরুণ তরুণীরা জুতা পায়ে আড্ডা দেওয়া শুরু করে একই শহীদ মিনারে। এমনকি এ শহীদ মিনারে মাদক সেবনও হয় বলে জানান স্থানীয়রা।
শহীদ বেদীর পাশে ঘাসের অংশে শুয়ে আছেন কিছু মানুষ। এই পৃথিবীর কোথাও মাথা গোঁজার ঠাঁই না থাকলেও শহীদ মিনার তাদের ফেলে দেয় নি। ১৩-১৪ বছরের কিশোর পানি বিক্রেতা সুমনদের যেন গভীর মমতায় আগলে রেখেছে এই শহীদ মিনার।
সুমন বলে, ওই একুশে ফেব্রুয়ারি আইলেই শহীদ মিনারে ঝাড়পোছ করা হয়। সবাই ছবি তুলে। হের পর আর কেউ মনেই রাখে না। কতো মানুষতো শহীদ মিনারের ওপর বইসা সিগারেট গাঁজাও খায়।
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রফিক, সালাম, বরকতসহ আরো অনেকে জীবন দিয়েছিলো মাতৃভাষা বাঙলার মান রক্ষার্থে। কিন্তু আমরা কী আদৌ এখন শহীদের প্রাপ্য সামান্য টুকু দিতে পারছি এ নিয়ে সংশয় এখন অনেকের মনেই।
বাংলাদেশ সময়: ০৫০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৫