ঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর মামলার রায়ের খসড়া ফাঁসের মামলায় আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জ (অভিযোগ) শুনানির জন্য আগামী ১২ মার্চ দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
মঙ্গলবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) মামলার চার্জ শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল।
ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এসএম শামসুল আলম শুনানি শেষে চার্জ শুনানির জন্য আগামী ১২ মার্চ নতুন করে দিন ধার্য করেন। এ সময় সাকা চৌধুরীর ছেলে হুমাম কাদের চৌধুরী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামের জুনিয়র আইনজীবী মেহেদী হাসান মামলার শুরু থেকেই পলাতক।
অপর চার আসামি সাকার আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম, ম্যানেজার একেএম মাহবুবুল হাসান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অফিস সহকারী (সাঁটলিপিকার) ফারুক হোসেন ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী নয়ন আলী কারাগারে আটক আছেন। মঙ্গলবার তাদের আদালতে হাজির করা হয়।
গত বছরের ২৮ আগস্ট ডিবির পরিদর্শক মো. শাহজাহান আসামি ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদেরকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। তবে রায়ের আগেই সাকা চৌধুরীর স্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্য এবং আইনজীবীরা রায় ফাঁসের অভিযোগ তোলেন। তারা ‘রায়ের খসড়া কপি’ সংবাদকর্মীদের দেখান।
রায় ঘোষণার পরদিন ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার একেএম নাসির উদ্দিন মাহমুদ বাদী হয়ে ২ অক্টোবর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে শাহবাগ থানায় একটি জিডি করেন। মামলায় ট্রাইব্যুনালের ফারুক ও নয়ন এবং ব্যারিস্টার ফখরুলের জুনিয়র আইনজীবী মেহেদীকে আসামি করা হয়।
এছাড়া ৪ অক্টোবর ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান বাদী হয়ে ঢাকার শাহবাগ থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় বলা হয়, মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায় ঘোষণার পূর্বেই রায়ের কপি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী, ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রতিক্রিয়া ব্যস্ত করেন যে, ইন্টারনেটের মাধ্যমে তারা রায় ঘোষণার পূর্বেই রায়ের কপি পেয়েছেন। এ সময় তারা রায়ের স্পাইরাল বাইন্ডিং কপি মিডিয়ায় প্রদর্শন করেন এবং তা নিয়েই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রবেশ করেন।
চার্জশিটে বলা হয়, মিডিয়ায় রায় প্রকাশ হলে মেহেদী হাসানের চেম্বারে গিয়ে রায় কিভাবে ফাঁস হলো সে বিষয়ে জানতে চায় পরিচ্ছন্নকর্মী নয়ন আলী। মেহেদী হাসান তাকে জানায়, রায়ের কপি তার কাছ থেকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবার নিয়ে গেছে। তারাই অনলাইনে এ রায় ফাঁস করে। নয়ন আলীকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন মেহেদী।
নয়ন আলীর জবানবন্দির ভিত্তিতেই ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম ও সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ম্যানেজার মাহবুবুল আহসানকে গ্রেফতার করা হয়েছে মর্মে চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়।
চার্জশিটে আরও বলা হয়, আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বিচার বিভাগকে প্রশ্নবিদ্ধ ও দেশ-বিদেশে বিচার বিভাগ ও রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন করতেই কৌশলে রায়ের কপি সংগ্রহ করে তা এমএস ওয়ার্ড থেকে পিডিএফ এ রুপান্তর করে অনলাইনে প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৫