জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: চলমান সহিংসতা ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সরকারকে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাধাগ্রস্ত করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে দশম জাতীয় সংসদের পঞ্চম অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান প্রধানমন্ত্রী।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য এম এ হান্নানের প্রশ্নের প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, চলমান পরিকল্পনার আলোকে উন্নয়নের আন্তরায়গুলো দূরীভূত করে উন্নয়ন কার্যক্রমকে আরো চাঙ্গা করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
তিনি জানান, অপ্রত্যাশিত রাজনৈতিক অস্থিরতা ও কার্যক্রম বাস্তবায়নের সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় নিয়ে মন্ত্রণালয়গুলোতে নীতি-কৌশল গ্রহণ করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, সরকারের গৃহীত পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রকল্প ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং ব্যক্তিখাতের সহায়ক নীতি কৌশল গ্রহণের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে স্থিতিশীল অর্থনীতি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশের অগ্রগতি ও উন্নয়ন অদূর ভবিষ্যতেও বিভিন্ন অন্তরায়কে মোকাবেলা করে এগিয়ে যাবে বলে আমি দৃঢ় বিশ্বাস রাখি।
সরকারি দলের সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারোর প্রতি বৈরিতা নয়, সব বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানই হবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতির মূলমন্ত্র।
আমাদের দৃঢ় ও নিরলস প্রচেষ্টার ফলে বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে অর্জিত সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতির তকমা ঘুঁচিয়ে আমরা বাংলাদেশকে একটি শান্তিপ্রিয়, উন্নয়নকামী ও দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন ও আত্মমর্যাদাপূর্ণ পররাষ্ট্র নীতির মূল দর্শন অবলম্বন করে বাংলাদেশ আজ বিশ্ব পরিমণ্ডলে একটি প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক, কার্যকর ও অবদানক্ষম রাষ্ট্র হিসেবে দৃশ্যমানতা ও স্বীকৃতি লাভ করেছে। দারিদ্র্য দূরীকরণ, নারীর ক্ষমতায়ন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূলে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি এবং উদ্যোগের ফলে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে। বিশ্বাবাসীর কাছে বাংলাদেশের এই ভাবমূর্তি বজায় রাখতে আওয়ামী লীগ সরকার নিরলসভাবে কাজ করেছে এবং এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে ইনশাল্লাহ।
আবদুর রহমান বদির প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী ২০২১ সালের মধ্যে প্রত্যেক ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়। ২০০৬ সালে দেশের ৪৩ শতাংশ লোক বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগ করতো যা বর্তমানে ৭০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
তিনি জানান, আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৫ সালের এ পর্যন্ত ৬৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে মোট ৫ হাজার ২৫১ মেগাওয়াট এবং ভারত থেকে আমদানির মাধ্যমে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎসহ সর্বমোট ৫ হাজার ৭৫১ মেগাওয়াট ক্ষমতার নতুন বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করেছে। বাংলাদেশে বর্তমানে বিদ্যুতের স্থাপিত উৎপাদন ক্ষমতা ১১ হাজার ২৬৫ মেগাওয়াট।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৫