ঢাকা: কৃষি খাতে নারীকে (কৃষাণি) রাষ্ট্রীয় প্রণোদনা ব্যবস্থায় আনতে ‘পারিবারিক কৃষি কার্ড’ ব্যবস্থা চালুর দাবি জানানো হয়েছে।
রোববার (০১ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাব ভিআইপি লাউঞ্জে ‘সাধারণ সম্পাদক ও সেবায় নারীর অভিগম্যতা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ দাবি জানান।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে সামনে রেখে গ্রামীণ জীবনযাত্রার স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের জন্য প্রচারাভিযান (সিএসআরএল) ও অক্সফাম যৌথভাবে এর আয়োজন করে।
সেমিনারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক শরমিন্দ নীলোর্মী বলেন, সরকার এক কোটি ৫৪ লাখ প্রকৃত কৃষককে চিহ্নিত করেছে।
রাষ্ট্রীয় প্রণোদনার অংশ হিসেবে এক কোটি ৩৯ লাখ কৃষকের মাঝে ‘কৃষক কার্ড’ বিতরণ করা হয়েছে। এরমধ্যে কতজন কৃষাণিকে কার্ড দেওয়া হয়েছে কৃষি বিভাগ জানে না।
তিনি বলেন, দেশে এক কোটি ৮০ লাখ নারী শ্রমিকের মধ্যে ১১৬ শতাংশ নারীই কৃষি, পশুপালন, হাঁস-মুরগি পালন, মাছ চাষসহ কৃষি কাজে জড়িত।
নারী অর্থনীতিতে অবদান রেখেও রাষ্ট্রীয় প্রণোদনা বঞ্চিত। কৃষক কার্ডের মতো পারিবারিক কৃষক কার্ড চালু করলে কৃষক, কৃষাণীসহ পুরো পরিবার উপকৃত হবে।
অক্সফাম রিজিওনাল পলিসি কো-অর্ডিনেটর জিয়াউল হক মুক্তা বলেন, পারিবারিক কৃষি কার্ড স্মার্ট কার্ডের মতো করলে নারী-পুরুষ উভয় কৃষিসহ সর্বক্ষেত্রে উপকৃত হবে।
তিনি বলেন, নারী খাস জমি পাওয়া, জাতীয় বাজেট, তথ্য প্রযুক্তির অধিকার থেকেও বঞ্চিত। নারীর প্রতি বৈষম্য দূর করতে সিডো সনদ সংরক্ষণ বাতিলের দাবি করেন তিনি
সিএসআরএল সভাপতি ও সাবেক উপদেষ্টা ড. সিএস করিম বলেন, কৃষক কার্ড কৃষকরা পেলেও কৃষাণিরা পাননি। ফলে নারীরা কৃষিতে অধিকার বঞ্চিত।
তিনি বলেন, সরকার ইচ্ছে করলে নারীরা সহজেই এ অধিকার পেতে পারে। নারীর ক্ষমতায়ন ও অধিকার আদায়ে তথ্য প্রযুক্তি বড় বাঁধা বলে উল্লেখ করেন তিনি।
পারিবারিক কৃষি কার্ডের পক্ষে মত দিয়ে সংসদ সদস্য ও নারী নেত্রী শিরীন আখতার বলেন, নারীর অংশগ্রহণ ছাড়া কৃষি পূর্ণতা পায় না।
পারিবারিক কৃষি কার্ডের মাধ্যমে নারী-পুরুষ উভয়ই কৃষিতে আগ্রহী হবে। বন্ধ হবে কৃষিতে মধ্যসত্ত্বভোগীর দৌরাত্ম্য।
তিনি বলেন, প্রতিবাদ করতে পারে না বলে নারী অধিকার বঞ্চিত। নারীর কর্মপরিবেশ ও নারীকে তার অধিকার আদায়ে সোচ্চার করে তোলাই বড় চ্যালেঞ্জ।
খাস জমিতে নারীর অধিকার নিশ্চিতে রাজনৈতিক সদিচ্ছা জরুরি বলে মনে করেন তিনি। নারী উন্নয়ন নীতি বাস্তবায়নে মৌলবাদীরা বাধা বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, নারীর কর্ম ঘণ্টার বেশির ভাগ নষ্ট হয় সন্তান লালনে। সেক্ষেত্রে বাজেটে ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপনে বরাদ্দ রাখার দাবি জানাই।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০১৫