ঢাকা: রাজশাহীর নওহাটা পৌর মেয়র আব্দুল গফুরের মরদেহের দ্বিতীয়বারের মতো ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে মঙ্গলবার।
এর আগেও ৪ জানুয়ারি তার মরদেহ ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়।
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর রাজশাহী থেকে ঢাকা আসেন রাজশাহী নওহাটা পৌর মেয়র আব্দুল গফুর। এ বছরের ২ জানুয়ারি তার কোনো খোঁজ না পেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে রাজশাহীর পবা থানায় মামলা করে।
পরিবারের লোকজন কিছুই জানে না, অথচ দাফন করলেন বোন পরিচয় দিয়ে ঢাকার আজিমপুরে অন্য এক নারী। মেয়র গফুরের কীভাবে মৃত্যু হলো, কে তার মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলেন, তা কেউ বলতে পারেননি।
তবে পুলিশ মেয়র গফুরের মোবাইল ফোন ট্রাকিং করে তিন নারীকে আটক করেছে।
তারাই জানিয়েছেন, ঢাকার আজিমপুর গোরস্থানে গফুরকে দাফন করা হয়েছে।
রহস্য ঘনীভূত হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক হাবিবুজ্জামান চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বোর্ডের অন্য দুই সদস্য হলেন- ডা. আ খ ম সফিউজ্জামান ও ডা. প্রদীপ বিশ্বাস।
দাফন করা মরদেহের সঠিক পরিচয় জানতে ডিএনএ টেস্ট করা হবে।
অধ্যাপক হাবিবুজ্জামান চৌধুরী জানান, মরদেহের ভিসেরা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য মহাখালীর রাসায়নিক গবেষণাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ তার ডিএনএ সংগ্রহের জন্য সুরতহাল রিপোর্টে উল্লেখ করার কারণে এ টেস্ট করার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
অধ্যাপক চৌধুরী বলেন, ময়নাতদন্তের সময় লক্ষ করা গেছে, মরদেহের এর আগেও ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।
এদিকে, রাজশাহীর পবা থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, মোহম্মদপুর থানা থেকে মরদেহটি ঢামেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছিল।
মরদেহ উদ্ধারে রহস্য:
রাজশাহীর নওহাটা পৌর মেয়র আব্দুল গফুরের মরদেহ কোথা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, সে বিষয়টি নিয়ে এখনো রহস্য রয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গ সূত্র জানায়, এর আগে এ বছরের ৪ জানুয়ারি মেয়র গফুরের মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন ডা. কাজী গোলাম মখসেদ রহমান।
তিনি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে বদলি হয়েছেন। সেখানেই বর্তমানে তিনি কর্মরত।
ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক হাবিবুজ্জামান চৌধুরী জানান, ডা. কাজী গোলাম মখসেদ রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে, তার করা তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করার জন্য।
প্রতিবেদনটি পেলেই মরদেহটি কীভাবে ৪ জানুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছিল তা জানা যাবে।
জানা যায়, ৮ জানুয়ারি শামীমা নামে এক নারী তিনি নিজেকে গফুরের বোন পরিচয় দিয়ে আজিমপুর গোরস্থানে মরদেহ দাফন করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর রাজশাহী থেকে ঢাকা আসেন রাজশাহী নওহাটা পৌর মেয়র আব্দুল গফুর। এ বছরের ২ জানুয়ারি তার পরিবার তার কোনো খোঁজ না পেয়ে রাজশাহীর পবা থানায় মামলা করে।
এরপর পুলিশ গফুরের মোবাইল ফোন ট্রাকিং করে তিন নারীকে আটক করে।
নিখোঁজ হওয়ার আগে গফুরের সঙ্গে এই তিন নারীর মোবাইল ফোনে অনেকবার কথা বলেন। তারা জানান, গফুরকে তারা আজিমপুর গোরস্থানে দাফন করেছেন।
তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, মঙ্গলবার (০৩ মার্চ) গফুরের মরদেহ ফের উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০১৫