ঢাকা, শুক্রবার, ১০ মাঘ ১৪৩১, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ঘাঘর নদীতে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৫
ঘাঘর নদীতে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

গোপালগঞ্জ: বিজয়া দশমীর আনন্দ ভাগাভাগি ও প্রাণবন্ত করতে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ। ঘাঘর নদীতে অনুষ্ঠিত এ বাইচ দেখতে নদীর দুই পাড়, ঘাঘর ব্রিজ ও সড়কে জড়ো হয় হাজারো দর্শক।

নদীর মধ্যেও ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা ও ট্রলার নিয়ে অনেকে উপভোগ করছেন এ নৌকা বাইচ।
 
দুর্গা পূজা উপলক্ষে শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে ঘাঘর নদীর জাঠিয়ার মোড় থেকে ঘাঘরকান্দা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় এ নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার সহযোগিতায় কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও কোটালীপাড়া বনিক সমিতি এ নৌকাবাইচের আয়োজন করে। প্রতিযোগিতায় গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শতাধিক সরেঙ্গা, ছিপ, কোষা বাচারী নৌকা অংশ নেয়।

শত বছরেরও বেশি সময় ধরে চলে আসা এ বাইচ অনুষ্ঠিত হয় প্রতিবছর বিজয়া দশমীর পরের দিন। জেলার আশ-পাশের এলাকা ছাড়াও মাদারীপুর বাগেরহাট, বরিশাল জেলা থেকে অসংখ্য দর্শক এ নৌকাবাইচ উপভোগ করতে আসেন। নৌকাবাইচে অংশ নেয় শতাধিক নৌকা।

প্রতিযোগিতায় প্রধান আকর্ষণ ছিল নারীদের বাচারী নৌকা। তাদের তিনটি বাচারী নৌকা প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। নান্দনিক এ নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
 
এলাকার অধিকাংশ লোকই এ দিনটির জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। অনেকে গ্রামের বাইরে গিয়ে নানা কাজে শহরে জীবন-যাপন করেন। কিন্তু, এদিন তারা কাটান একেবারেই গ্রাম্য পরিবেশে আর গ্রামীণ সংস্কৃতির সঙ্গে।

কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, প্রায় দেড়শ’ বছর আগে যশোরের বিঘাপতির জমিদার খাজনা আদায়ের সুবিধায় ঘাঘর নদীতে দুর্গা পূজার পর এখানে মেলা ও নৌকা বাইচের আয়োজন করেছিলেন। সেই সময় থেকে প্রতিবছর দুর্গা পূজার সময় এখানে নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়।

নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথি হিসেবে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন এফবিসিসিআই-এর সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের  উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহম্মদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক খলিলুর রহমান।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন- গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, কোটালীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান, কোটালীপাড়া পৌর মেয়র এইচ এম অহিদুল ইসলাম হাজরা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুভাষ চন্দ্র জয়ধর, সাধারণ সম্পাদক এস এম হুমায়ুন কবির, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান হাজরা, কুশলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম বাদল, কোটালীপাড়া স্বেচ্ছাসেবক লীগের নারায়ণ চন্দ্র ধাম, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের  আহ্বায়ক মোহসিন উদ্দিন সিকদার, কোটালীপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান মুন প্রমুখ।

এ নৌকাবাইচের পুরস্কার হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ৫০টি টেলিভিশন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। প্রতিযোগিতা শেষে অতিথিরা বাইচে অংশগ্রহনকারীদের কাছে এসব টেলিভিশন তুলে দেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৫
এমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।