ঢাকা, রবিবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

সদরপুরে পদ্মা-আড়িয়াল খাঁ’র বালু লুট

রেজাউল করিম বিপুল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৫
সদরপুরে পদ্মা-আড়িয়াল খাঁ’র বালু লুট ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ফরিদপুর: ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় পদ্মা নদী ও আড়িয়াল খাঁ নদ থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু তুলে বিক্রি করছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল।

উপজেলার চরনাছিরপুর, দিয়ারা নারিকেল বাড়ীয়া ইউনিয়নের নদীর পাড়ে ড্রেজার বসিয়ে ট্রলারে করে চন্দ্রপাড়া ঘাটে স্তুপ করা হচ্ছে বালু।

সেই স্তুপ থেকে ট্রাকে করেও সরবরাহ করা হচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে। এভাবে দিনে অন্তত অর্ধশত ট্রাক বালু উত্তোলন করে তা বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় এক প্রভাবশালী মহলের নেতৃত্বে নদী থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রভাবশালী মহলের যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু লুটের মহোৎসব চালালেও প্রশাসন রয়েছে নির্বিকার। এতে নদী তীরবর্তী বসতি এবং হাজার হাজার একর ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়েছে।

বালু তোলার কাজে এখন অনেকটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন ঢেউখালী ইউনিয়নের চন্দ্রপাড়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য ইসলাম শেখ ওরফে ইসলাম মেম্বারের গ্রুপ।

প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুল খালেক (৫০) জানান, প্রায় প্রতি বছর নদীর পানি কমার পরপরই এ চক্রটির মদদে নদীর বুক থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হয়ে থাকে। কখনো মোটা পাইপ স্থাপন করে ড্রেজারের মাধ্যমে পদ্মা-আড়িয়াল খাঁ নদী থেকে ২-৩ কিলোমিটার দূরেও সরবরাহ করা হয়ে থাকে বালু।

তিনি আরো জানান, লুটের বালু দিয়ে লাখ লাখ টাকা চুক্তিতে পুকুর, নিচু এলাকা এবং জলাভূমি ভরাট করার ব্যবসা করা হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার কয়েকজন কৃষক বলেন, নদী ভাঙনের পর স্থায়ী চর জেগে ওঠায় আমরা পুনরায় নিজের জমিতে নতুন করে ভাঙন কবলিত হয়ে আবার নতুন করে নদীপাড়ে নতুন বসতি নির্মাণ করছি। কিন্তু এভাবে নদী থেকে বালু কাটলে সহসাই আমাদের নদীভাঙ্গনের কবলে পড়তে হবে। দীর্ঘদিন ধরে নদী থেকে বালু তোলার কারণে নদীর সর্বনাশ করা হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে এলাকার অবাদি জমি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।

বালু কাটার শ্রমিক শহিদ ও সাগর বলেন, আমরা দিন মজুর। আমাদের দোষ কি!

কার অধীনে কাজ করছেন জানতে চাইলে তারা বলেন, আমরা চন্দ্রপাড়া এলাকার ইসলাম মেম্বারের বালু কাটছি।

এ ব্যাপারে সদরপুর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার মো. আলমগীর হোসেন জানান, বিষয়টি জানা ছিলো না। যাই হোক এখন জানতে পারলাম। খুব দ্রুত এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে ইসলাম শেখ ওরফে ইসলাম মেম্বার বলেন, আমি নদী থেকে বালু কাটি না। আমার আগে থেকে যে বালু ছিলো তাই বিক্রি করছি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৫
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।