ঢাকা: নানা জল্পনা-কল্পনার পর দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) একদিনে ৫৮ জন কর্মকর্তার পদোন্নতি হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে কমিশন এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ পদোন্নতি দেয়।
এতে ৫ উপ-পরিচালককে পরিচালক পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। এছাড়া ৯ সহকারী পরিচালককে উপ-পরিচালক এবং ২৯ জন উপ-সহকারী পরিচালককে সহকারী পরিচালক পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া উপ-সহকারী পরিচালক পদে ১২ এবং কোর্ট পরিদর্শক পদে ৩ জনের পদোন্নতি হয়েছে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, একদিনে এত সংখ্যক পদোন্নতি এর আগে হয়নি।
দুদক সচিব এবং বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটির (ডিপিসি) সভাপতি আবু মো. মোস্তফা কামাল বাংলানিউজকে বলেন, পদোন্নতি দেওয়ার ক্ষেত্রে দক্ষতা ও যোগ্যতা মাপকাঠিতে কমিশনে পদোন্নতির সুপারিশ করা হয়েছে। সে হিসেবে কমিশন পদোন্নতি দিয়েছে।
প্রজ্ঞাপনের একটি কপি বাংলানিউজের কাছে রয়েছে। প্রজ্ঞাপন থেকে জানা যায়, উপ-পরিচালক থেকে পরিচালক পদে যারা পদোন্নতি পেয়েছেন তারা হলেন, মো. আক্তার হোসেন, মো. আবু সাইদ, মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী, শিরীন পারভীন ও মো. সৈয়দ ইকবাল হোসেন।
এছাড়া ৯ সহকারী পরিচালক থেকে উপ-পরিচালক পদে পদোন্নতি প্রাপ্তরা হলেন, মো. সামছুল আলম, শেখ আবদুস ছালাম, এবিএম আব্দুস সবুর, মো. মনজুর আলম, হেলাল উদ্দিন শরীফ, সৈয়দ আহমেদ, আবুবকর সিদ্দিক, রফিকুল ইসলাম (সংস্থাপন) ও ফজলুল হক।
সহকারী পরিচালক পদে ২৯জন পদোন্নতি পেয়েছেন। এরা হলেন, এস এম শামীম ইকবাল, মো. ইকবাল হোসেন, আবুল হাশেম কাজী, সৈয়দ সামসুল আরেফিন, মো. খলিলুর রহমান, মো. মজিবুর রহমান, মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, মো, আমির হোসেন, মঞ্জুর আলম চৌধুরী, খন্দকার আখেরুজ্জামান, মো. জাকির হোসেন, কমল কুমার রায়, সাইফুল্লাহ মো. এমরান, মো. আবদুল ওয়াদুদ, মো. শফিউল্লাহ, মো. ফখরুল ইসলাম, মো. শহিদুল আলম সরকার, একে এম বজলুর রশীদ, সৈয়দ আতাউল কবির, মো. শহিদুল ইসলাম মোড়ল, মো. হাফিজুর রহমান, জাফর আহমেদ, মো. মনিরুল ইসলাম, এইচ এম আখতারুজ্জামান, মো. আমিনুল ইসলাম. মো. ফজলুল বারী, বীরকান্ত রায়, মোহাম্মদ সিরাজুল হক ও এ কে এম ফজলে হোসেন।
উপসহকারী পরিচালক পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত ১২জন হলেন, আ স ম শাহ আলম, মো. রিয়াজ উদ্দিন, মো. রইস উদ্দিন, মো. জসিম উদ্দিন গাজী, মো. সুরেশ চন্দ্র রায়, মো. কামরুজ্জামান, দীপন চৌধুরী, মো. নাজিম উদ্দিন, মো. একরামুর রেজা, মো. নজরুল ইসলাম, মো. নুরুল ইসলাম, মানিক লাল দাস।
কোর্ট পরিদর্শক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন ৩জন। এরা হলেন, নিশীথ কুমার ঘোষ, নিশি কুমার চাকমা ও মো. গিয়াস উদ্দিন।
দুদকের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, সচিব নিয়ে জটিলতা অবসানের পর দুদকের প্রধান কার্যালয়ে গত সপ্তাহের মঙ্গল ও বুধবার কমিশনে ডিপিসি’র বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত কমিশনের সচিব আবু মো. মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ওই বৈঠক দুটি অনুষ্ঠিত হয়।
চলতি বছরের ১০ মে কমিশন বৈঠকে পাঁচ পরিচালকসহ অর্ধ শতাধিক কর্মকর্তার পদোন্নতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও দুদকের সাবেক সচিব মাকসুদুল হাসান খান এতে স্বাক্ষর না করায় জটিলতা তৈরি হয়। পরে সাবেক সচিবের সঙ্গে কমিশনের সদস্যদের মতবিরোধের কারণে সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়।
সাবেক এ সচিব জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতির পক্ষে মত দিলেও কমিশনাররা জ্যেষ্ঠতার পাশাপাশি যোগ্যতা ও দক্ষতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে পদোন্নতির পক্ষে মত দেন। উভয়পক্ষে দীর্ঘ আলোচনা হলেও শেষ পর্যন্ত এ পদোন্নতির বিষয়টি ঝুলে যায়।
এ মতবিরোধের কারণে গত মে মাসে কমিশন শেষ পর্যন্ত মাকসুদুল হাসানকে দুদক থেকে প্রত্যাহারের জন্য জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়। অবশেষে মাকসুদুলকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় দুদক থেকে প্রত্যাহার করে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ দেয়। দুদক থেকেই সংস্থার অনিষ্পন্ন বিভাগের মহাপরিচালক আবু মো. মোস্তফা কামালকে পদোন্নতি দিয়ে করা হয় সচিব। সচিব পদে পদোন্নতির মাস না পেরুতেই দুদকের এ পদোন্নতি হয়।
এদিকে পদোন্নতি না পাওয়া কয়েকজন কর্মকর্তা বাংলানিউজের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। উদ্ধৃত না হওয়ার শর্তে তারা বাংলানিউজকে বলেছেন, এ পদোন্নতিতে দুদকের কর্মকর্তাদের মধ্যে কমিশনের প্রতি অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে বলেও তারা অভিযোগ করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৫/আপডেট: ১৮৫৩ ঘণ্টা
এডিএ/এমজেএফ/