ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

চুক্তি শিগগিরই

সিন্ডিকেট নয়, অভিজ্ঞ এজেন্সি কর্মী পাঠাবে মালয়েশিয়ায়

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৫
সিন্ডিকেট নয়, অভিজ্ঞ এজেন্সি কর্মী পাঠাবে মালয়েশিয়ায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি

ঢাকা: সামান্য কিছু জটিলতায় আটকে যাওয়া মালয়েশিয়ার সঙ্গে ‘জিটুজি প্লাস’ চুক্তিটি শিগগিরই সই হতে যাচ্ছে। এরপর বড় পরিসরে কর্মী পাঠানো হতে দেশটিতে।

বিশেষ কোনো সিন্ডিকেট নয়, যেসব রিক্রুটিং এজেন্সির অতীত রেকর্ড ভালো, তারাই মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি।

বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইস্কটানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ১৮ ডিসেম্বর ‘আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান তিনি।

এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মালয়েশিয়ার সঙ্গে জিটুজি প্লাস চুক্তির বিষয়ে আমরা সর্বশেষ অবস্থায় এসে পৌঁছেছি। এখন শুধু এমওইউ সই বাকি। সেটা হলেই দেশটিতে শ্রমিক পাঠানো শুরু হবে।

তবে মালয়েশিয়ায় ‘জিটুজি’ পদ্ধতিতে শ্রমিক যাওয়া অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখনও শ্রমিক যাচ্ছে। তবে বড় পরিসরে নয়। আমরা চাই না অতিরিক্ত লোক যাক। পরে তারা খেতে পাবে না, বাসস্থান পাবে না। চুক্তির মাধ্যমে কর্মীর কর্ম ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই বড় পরিসরে কর্মী পাঠানো হবে।
 
নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, মালেয়শিয়ায় সিন্ডিকেটের বিষয়টি আমার জানা নেই। মালয়েশিয়ার কোম্পানির কাছ থেকেও এমন কোনো বিষয় জানতে পারিনি। আমরা যে সমঝোতা সই করতে যাচ্ছি সেখানে ‘বায়রা’ না বলে বিআরএ বলেছি। যার অর্থ, বাংলাদেশ রিক্রুটিং এজেন্সি । আমরা কারও পক্ষ নেই। বাংলাদেশ রিক্রুটিং এজেন্সির যত ভালো ভালো কোম্পানি আছে, অতীত রেকর্ড যাদের ভালো, মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোয় যারা অভিজ্ঞ- এসব এজেন্সির নাম মালয়েশিয়ায় পাঠাবো। তারা সেখান থেকে তারা বাছাই করবে।

এদিকে সৌদি সামরিক জোটে বাংলাদেশ যোগ দিলে বাংলাদেশের কর্মীরা আইএসের টার্গেট হবে কিনা এমন পশ্নের জবাবে নুরুল ইসলাম বলেন, এই সরকারের নীতির ফলে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের একটা সমঝোতা হচ্ছে। এই সমঝোতার আগেই আমি সৌদিতে যাব। সমঝোতা হলে অসুবিধা কীসের। আমাদের দেশে তো আর আইএস নেই।

সংবাদ সম্মেলনে নুরুল ইসলাম বিএসসি লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘বিশ্বময় অভিবাসন, সমৃদ্ধ দেশ, উৎসবের জীবন’ প্রতিপাদ্যে এবার আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস পালিত হবে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিবাসনের গুরুত্ব আগের তুলনায় এখন অনেক বেশি এবং আমাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অভিবাসী কর্মীদের অবদান অপরিসীম। বর্তমানে প্রায় ৯৬ লাখ বাংলাদেশি নাগরিক অভিবাসী হিসেবে ১৬০টি দেশে সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন।

তিনি আরও বলেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স জাতীয় উন্নয়নের অগ্রগতিকে আরও ত্বরান্বিত করছে। এবছর প্রবাসী ভাই-বোনদের পাঠানো রেমিটেন্স ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে গিয়ে দাঁড়াবে।

নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, বিদেশে কর্মসংস্থানের বর্তমান ধারা অব্যাহত রাখার জন্য বিদ্যমান শ্রমবাজার ধরে রাখাসহ আমরা নতুন নতুন সম্ভাবনাময় শ্রম বাজার অনুসন্ধান করছি। থাইল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায় কর্মী পাঠানো বিষয়ে এরইমধ্যে আলাপ-আলোচনা হয়েছে।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী বলেন,  এ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ৬৪টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও ৫টি ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজির মাধ্যমে আমরা প্রায় এক লাখ ১৫ হাজার দক্ষ জনশক্তি প্রতিবছর তৈরি করতে সক্ষম হচ্ছি। যাদের একটি অংশ বিদেশে চাকরি নিয়ে যাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অভিবাসী দিবস উপলক্ষে শুক্রবার দিনব্যাপী কর্মসূচি রয়েছে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের। এর মধ্যে সকাল  ৮টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা থেকে র‌্যালি। সকাল সাড়ে ৯টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অভিবাসী মেলাসহ দিনব্যাপী কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হজরত আলী, বিএমইটির ডিজি বেগম শামসুন নাহারসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলন শেষে মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিং সেন্টারে ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অভিবাস’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। অতিরিক্ত সচিব হজরত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি। এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক বেগম শামছুন নাহার, অতিরিক্ত মগাপরিচালক নিজাম উদ্দিন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৫/আপডেট: ১৩২৯ ঘণ্টা
জেপি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।