আর এই খানাখন্দের সড়কে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ৫৮ বর্গকিলোমিটারের বরিশাল সিটি করপোরেশনের নাগরিকরা।
তাদের দাবি, সঠিক-সমন্বিত পরিকল্পনা আর মান উন্নয়ন করে সড়ক নির্মাণ করা হোক, যাতে বৃষ্টির পানি জমে সড়কগুলো বার বার ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগের তথ্যানুযায়ী, সিটি করপোরেশনে পিচ ঢালাইয়ের রাস্তা রয়েছে ৪৬৬ কিলোমিটার। পাশাপাশি সিসি রাস্তা ১২৮ কিলোমিটার, কাঁচা রাস্তা ৩৩২ কিলোমিটার, খোয়ার রাস্তা ২৮ কিলোমিটার ও হেরিংবোন রয়েছে ১৮ কিলোমিটার।
পুরো বর্ষাকালে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়ে পিচ ঢালাইয়ের রাস্তা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার পরিমাণ প্রায় ৪০ শতাংশ। আর প্রকৌশল বিভাগের মতে সড়কে সৃষ্ট খানাখন্দে মানুষের ভোগান্তির পরিমাণ বড় হলেও এগুলো মেরামতে যেমন সময় লাগবে না তেমন ব্যয়ও বেশি হবে না।
খানাখন্দে ভরা এসব সড়কের মধ্যে পুলিশ লাইন রোড, সদর রোড, হেমায়েত উদ্দিন রোড, বগুড়া রোড, হাসপাতাল রোড অন্যতম।
এর বাইরে দীর্ঘ সময় ধরে সাগরদী পোল থেকে কর্ণকাঠী খেয়াঘাট পর্যন্ত ধান গবেষণা রোড, মড়কখোলার পোল থেকে নতুল্লাবাদ এলাকা পর্যন্ত খালের উত্তর পাশের সড়ক, কলেজ রোড, সোহেল চত্ত্বরস্থ আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনের সড়কসহ বেশ কিছু সড়ক দীর্ঘদিন ধরে ভাঙাচোরা রয়েছে। দীর্ঘসময়ে সংস্কার না করায় সড়কে খানাখন্দ আর বড় বড় গর্ত এখন এলাকার মানুষের চরম দুর্ভোগের কারণ।
এছাড়া বরিশাল নগরের ওসমান খান সড়ক, চৌমাথা থেকে রুইয়ার পোল ও সোহেল চত্ত্বরস্থ আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কের একাংশসহ বেশকিছু সড়কের সংস্কার কাজ দীর্ঘদিন আগে শুরু করেও বৃষ্টিসহ নানা অযুহাতে তা ফেলে রাখা হয়েছে।
একইভাবে প্রায় বছর পার হতে গেলেও নবগ্রাম রোডের রুইয়ার নতুন পোলের নির্মাণকাজ এখনও চলছে। বিকল্প সড়কের ব্যবস্থা হলেও ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় তাতে ঘটছে প্রায়ই দুর্ঘটনা।
নবগ্রাম রোডের বাসিন্দা সিকদার মাসুদ বলেন, খানাখন্দের রাস্তাঘাটে চলাচলের জন্য কোনো যানবাহনে ওঠার চেয়ে হাঁটা ভালো। ড্রেন সংস্কার না করায় বৃষ্টি হলেই রাস্তা পানিতে তলিয়ে যায়। নবগ্রাম রোডের রুইয়ার পোলের ব্রিজে এক বছর ধরে নির্মাণকাজ চলছে।
পরিকল্পনা করে সড়ক নির্মাণ করার দাবি জানান করিমকুটির এলাকার বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, বৃষ্টি হলেই যদি রাস্তার পিচ উঠে গিয়ে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়, তাহলে সে রাস্তা সংস্কারের নতুন কোনো পদ্ধতি খুঁজে বের করা উচিৎ।
বিসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আনিচুজ্জামান বলেন, এবছর অতি বৃষ্টির কারণে সড়কগুলোর এমন আবস্থা। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ হতে পারে। আর তার আওতাধীন ‘ক’ অঞ্চলের সড়কের মেরামতের কাজ শুরুও হয়ে গেছে। সামনের ক্ষরা মৌসুমের মধ্যেই সব সড়ক আগের মতো হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এদিকে মেরামত কাজ শুরু করে ১৮ অক্টোবর থেকে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত টানা বৃষ্টির কারণে কাজ বন্ধ রয়েছে।
তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিটুমিনের আওতাধীন এই সব রাস্তা মেরামত করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান প্রকৌশলী খান মো. নুরুল ইসলাম।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৭
এমএস/আরআর