ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ মাঘ ১৪৩১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

শজিমেকে রোগীর স্বজনকে মারপিটের ঘটনা ধামাচাপা!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৭
শজিমেকে রোগীর স্বজনকে মারপিটের ঘটনা ধামাচাপা!

বগুড়া: বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শজিমেক) ইন্টার্ন চিকিৎসকদের হাতে বেধড়ক মারপিটের শিকার নারী রোগীর ছেলে ও নাতিকে রাতের আঁধারে জয়পুরহাটে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বর্তমানে আহত অবস্থায় রোগী মাহেলা বেওয়ার (৭৫) ছেলে গাজীউর রহমান ও তার ছেলে, নাতি মো. শান্ত জয়পুরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পাশাপাশি শজিমেকে চিকিৎসাধীন শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত রোগী মাহেলা বেওয়াকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।

এদিকে শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা শজিমেকে রুদ্ধদার বৈঠক করেন। পুরো পরিস্থিতি সামলে নিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তাদের পক্ষে অবস্থান নিতে বাধ্য করেন। এভাবে রোগীর স্বজনকে মারার ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে শজিমেক সংশ্লিষ্টরা এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
 
বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (শজিমেক) উপাধ্যক্ষ ডা. রেজাউল আলম জুয়েল বাংলানিউজকে জানান, ওই ঘটনায় একপক্ষের দোষ নেই। উভয়পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এতে রোগীর কেউ আহত হয়নি। রোগীর স্বজনরা রাতেই নিজ এলাকায় চলে গেছেন।  

এছাড়া ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বেঠকের খবরও জানা নেই দাবি করেন উপাধ্যক্ষ।
 
অপরদিকে শজিমেকের উপ-পরিচালক ডা. নির্মলেন্দু চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, কয়েকজন দুষ্কৃতিকারী ওয়ার্ডে ঢুকে নারী ইন্টার্ন চিকিৎসকদের উত্যক্ত করেন। এ সময় আশেপাশে রোগীর সঙ্গে থাকা লোকজন তাদের মারপিট করে বের করে দেয়।
 
এমনকি বহিরাগত উত্যক্তকারীরা কয়েকজন ইন্টার্ন চিকিৎসককে একটি কক্ষের ভেতর আটকে রাখেন বলেও দাবি করেন তিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শজিমেকের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, রোগী মাহেলা বেওয়ার ছেলে গাজীউর রহমান ও নাতি মো. শান্তকে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণের অভিযোগ তুলে বেধড়ক মারপিট করেন। এরপর তাদের একটি কক্ষে আটকে রেখে সৃষ্ট পরিস্থিতি সামলে নিতে তারা শজিমেক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘটনার রাতেই রুদ্ধতার বৈঠকে বসেন। পাশাপাশি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তাদের পক্ষে অবস্থান নিতে বাধ্য করেন।

এদিকে শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে জয়পুরহাট সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. নাজনীন বাংলানিউজকে জানান, আহত অবস্থায় সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে তারা এখানে ভর্তি হন। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত তারা চিকিৎসাধীন।
 
বগুড়া শহরের ছিলিমপুর টাউন ফাঁড়ি পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (টিএসআই) আশুতোষ বাংলানিউজকে জানান, শুক্রবার দুপুরের দিকে শজিমেক কর্তৃপক্ষ মাহেলা বেওয়াকে ছাড়পত্র দিয়েছে।  

এরপর তিনি কীভাবে বা কার সঙ্গে কোথায় গিয়েছেন তা জানাতে পারেননি টিএসআই আশুতোষ।
 
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) দিনগত রাত পৌনে ৯টার দিকে শজিমেকের মেডিসিন বিভাগের মহিলা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন মাহেলা বেওয়ার ছেলে গাজীউর রহমান ও তার ছেলে, নাতি মো. শান্ত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের হাতে বেধড়ক মারপিটের শিকার হন। তারা জয়পুরহাট সদর উপজেলার পুরানতৈল গ্রামের বাসিন্দা।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৭
এমবিএইচ/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।