ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ মাঘ ১৪৩১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

উদ্বোধনের আগেই কোটি টাকার স্কুলভবন পানিতে!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৭
উদ্বোধনের আগেই কোটি টাকার স্কুলভবন পানিতে! নতুন ভবনের অধিকাংশ বিলীন হওয়া ছাড়াও পেছনের পুরনো ভবনটিও পুরোপুরি নদীভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। ছবি: বাংলানিউজ

ব‌রিশাল: প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার বাহেরচর শ্রীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টারের নতুন বহুতল ভবনের অধিকাংশই তেতুলিয়া নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

নতুন ভবনের বাকি অংশ ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া ছাড়াও পেছনের পুরনো ভবনটিও পুরোপুরি নদীভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। বর্তমানে পুরনো ভবনের ১০ ফুট দূরে নদীর অবস্থান।

হুমকির মুখে শ্রীপুর বাজার, শ্রীপুর জামে মসজিদ ও বাহেরচর কওমি মাদ্রাসাসহ বহু বসত-ঘর, ফসলিজমিও।

গত মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) রাত থেকে শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) দিবাগত রাত পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে বিদ্যালয় ভবনটির বেশিরভাগ অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে বাকি অংশ ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে।

নির্মাণ শেষে গত ২৮ জুন সাইক্লোন শেল্টার কাম বিদ্যালয় ভবনটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে ভবনটি নদীভাঙনের ঝুঁকির মধ্যে চলে আসায় উদ্বোধন না করে গত সপ্তাহে নিলামে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রকৌশল বিভাগ। কিন্তু নিলামের আগেই বিলীন হয়ে গেছে ভবনটির অধিকাংশ।

স্থানীয় ব্যবসায়ী মালেক খান জানান, গত কয়েক বছর ধরে তেতুলিয়া আর কালাবদর নদীর ভাঙনে নবগঠিত শ্রীপুর ইউনিয়নের বহু ফসলি-বসতি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। বিশেষ করে কাজিরদোয়ানি মোহনার কারণে ভাঙন অনেকাংশে বেশি হয় ইউনিয়নের শ্রীপুর বাজার সংলগ্ন এলাকায়।

সর্বশেষ চলতি বছরে শ্রীপুর বাজার সংলগ্ন এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। এতে করে বিদ্যালয়টির পুরনো ও নবনির্মিত ভবন হুমকির মুখে পড়ে যায়। গত ৪/৫ দিন আগে শুরু হয় তীব্র নদীভাঙন। শুক্রবার ভবনটির মূল অংশ ভেঙে নদীগর্ভে ও বাকি অংশ ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে।

শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হারুন অর রশিদ মোল্লা জানান, ১ কোটি টাকার মতো ব্যয়ে সাইক্লোন শেল্টার কাম বিদ্যালয় ভবনটির নির্মাণকাজ শুরু হয় এ বছরের শুরুর দিকে। শুরুর দিকে নদী অনেকটাই দূরে ছিলো এবং নদী সংলগ্ন বাজারের পর স্কুল ছিলো। আর এখন নদী সংলগ্ন স্কুল আর তার পেছেনে বাজার চলে গেছে।

বাহেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মাহমুদ হোসেন জানান, অনেক দিন ধরে সাইক্লোন শেল্টার কাম বিদ্যালয় ভবনটি হুমকির মুখে ছিল। কিন্তু ভাঙন প্রতিরোধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট প্রকৌশল বিভাগ। তাই বিদ্যালয়ের প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থীর জন্য নির্মিত নতুন এ ভবনটি উদ্বোধনের আগেই নদী ভাঙনের শিকার হলো।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ভাঙনে নদীগর্ভে যাওয়া ভবনের অংশে কোনো ধরনের সাংকেতিক চিহ্ন দেওয়া হয়নি।

স্থানীয় ব্যবসায়ী রায়হান জানান, নাব্যতা থাকায় ও বরিশাল-ভোলা নৌ-রুট হওয়ায় নদীর ভাঙন কবলিত অংশে যাত্রীবাহী লঞ্চ ও যাত্রীবাহী জাহাজ চলাচল করে প্রতিনিয়ত। সেখানেই ভবনের রডসহ ধ্বংস্তুপের অনেক কিছু জোয়ারে পানির নিচে চলে যায় আর ভাটায় দৃশ্যমান হয়। কিন্তু ওই জায়গা নির্ধারণ না করে দেওয়ায় যেকোনো সময় বড় ধরনের নৌ-দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

বাংলা‌দেশ সময়: ১৪৪৫ ঘণ্টা, অ‌ক্টোবর ২৮, ২০১৭
এমএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।