মঙ্গলবার (৬ মার্চ) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অশোক কুমার সিংহ টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে এ চার্জশিট জমা দেন।
মামলায় টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও জেলা পরিষদের সদস্য আব্দুল হামিদ ভোলা, ভূঞাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক তাহেরুল ইসলাম তোতা, অলোয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ মাসুদুল হক, অলোয়া ইউপি সদস্য মকবুল হোসেন তরফদার, চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের ঘনিষ্ট সহযোগী শওকত হোসেন, নাসির উদ্দিন রানা, মেহেদী হাসান, লাল মাহমুদ, মাঈনুল হোসেন, সানোয়ার হোসেন বাবু, খোকন মিয়া, খলিলুর রহমান, মামুন সরকার, আব্দুল লতিফ, কনিক হাসান, আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হয়েছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা, মরদেহ গুম এবং সহায়তা ও হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে। বিচারিক হাকিম, চিকিৎসক, পুলিশসহ ২৮ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
ভূঞাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিতে পদবঞ্চিত ও পদপ্রাপ্তদের মধ্যে বিরোধ, ঠিকাদারি কাজ নিয়ে বিরোধ এবং ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতা ফরিদ নির্বাচনে নুরুল ইসলামের বিরোধীতা করায় এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে। এ হত্যায় ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক তাহেরুল ইসলাম তোতা পরিকল্পনা করেন। পরে তা বাস্তবে রুপদানের অর্থ দিয়ে অন্য আসামিদের হত্যার কাজে নিয়োজিত করেন। এ হত্যাকাণ্ডে প্রধান সমন্বয়কের ভূমিকা ইউপি সদস্য মকবুল হোসেন তরফদার পালন করেন বলে চার্জশিটে বলা হয়েছে।
২০১৬ সালর ৫ ডিসেম্বর রাতে নিজ কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফেরার পথে রকিবুল ইসলাম ফরিদ নিখোঁজ হন। পরদিন বাড়ির পাশের একটি পুকুর পাড় থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওইদিনই তার ভাই ফজলুল করিম বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে ভূঞাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে তিনি তাহেরুল ইসলাম তোতা, আব্দুল হামিদ ভোলা ও নুরুল ইসলামসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে একটি সম্পূরক মামলা করেন। আদালত দু’টি মামলা একসঙ্গে তদন্তের নির্দেশ দেন। ২০১৬ সালের ২১ ডিসেম্বর মামলাটি তদন্তের জন্য ভূঞাপুর থানা থেকে টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তকালে আটজন আসামি গ্রেফতার হয়। এদের মধ্যে মাঈনুল হোসেন, শওকত হোসেন, মকবুল হোসেন তরফদার, নাসির উদ্দিন রানা ও নুরুল ইসলাম আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন।
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল রহমান খান ফারুক বলেন, আদালতের চূড়ান্ত রায়ে আওয়ামী লীগ নেতারা দোষী প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, মার্চ ০৬, ২০১৮
আরবি/