শনিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি মো. একাব্বর হোসেন।
বৈঠকে কমিটির সদস্য, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, রমেশ চন্দ্র সেন, এ কে এম এ আউয়াল (সাইদুর রহমান), রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, ফয়জুর রহমান, লুৎফুন নেছা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিশেষ আমন্ত্রণে অংশ নেন সাংবাদিক, কলামিস্ট গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ, নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি একাব্বর হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, সংসদে উত্থাপিত বহুল আলোচিত ওই বিলটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। যারা দীর্ঘদিন ধরে এ বিষয়ে কাজ করেন তাদের মতামত নেওয়া হয়েছে। আনা হয়েছে ছোট-খাটো কিছু সংশোধনী। ওই সংশোধনীসহ বিলটি পাসের সুপারিশ করা হয়েছে।
চলতি অধিবেশনেই বিলটি পাস হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের ব্যাপক আন্দোলনের মুখে দীর্ঘ এক বছর ঝুলে থাকার পর বহুল আলোচিত ওই বলটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গত ১৩ সেপ্টেম্বর সংসদে উত্থাপনের পর তা অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
সংসদে উত্থাপিত বিলে কোনো ব্যক্তির বেপরোয়া ও অবহেলাজনিত গাড়ি চালানোর কারণে দুর্ঘটনা ঘটলে এবং সেই দুর্ঘটনায় কেউ আহত বা নিহত হলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ড বা পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। বিলের ১০৫ ধারায় বলা হয়েছে, দুর্ঘটনার জন্য শাস্তি দেওয়া হবে ফৌজদারি দণ্ডবিধি অনুযায়ী। দুর্ঘটনায় কোনো ব্যক্তির মৃত্যু হলে ৩০২ ধারা অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
হত্যা না হলে ৩০৪ ধারা অনুযায়ী যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে। বিলে আরো বলা হয়েছে, ‘তবে শর্ত থাকে যে, ফৌজদারি কার্যবিধিতে যাহাই থাকুক না কেন, কোন ব্যক্তি বেপরোয়া ও অবহেলাজনিত মোটরযান চালানোর কারণে সংঘটিত দুর্ঘটনায় কোনো ব্যক্তি গুরুতরভাবে আহত হইলে বা তাহার প্রাণহানি ঘটলে উক্ত ব্যক্তি অনধিক পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন। ’
বিলে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালিয়ে কাউকে আহত করলে তিন বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আর ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা করা হয়েছে বাধ্যতামূলক। ট্রাফিক আইন অমান্য করলে পয়েন্ট কাটার ব্যবস্থাও থাকবে আইনে। নির্ধারিত পয়েন্টের নিচে গেলে লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে। চালককে নতুন করে আবার লাইসেন্স নিতে হবে। বিলে ব্যক্তিগত গাড়ি চালনার জন্য চালকের বয়স আগের মতোই অন্তত ১৮ বছর রাখা হয়েছে। তবে পেশাদার চালকদের বয়স হতে হবে কমপক্ষে ২১ বছর।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৮
এসএম/এএ