চর কালকিনি ইউনিয়নের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডে পাঁচ বছর আগে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে বাঁশ-কাঠ দিয়ে সাঁকোটি নির্মাণ করা হয়। দুই বছর না যেতেই সাঁকোটি নড়বড়ে হয়ে যায়।
চর কালকিনি একটি কৃষি নির্ভর গ্রাম। এখানে ধান, বাদাম, মরিচ, সয়াবিন উৎপাদন হয়ে থাকে। এখানকার ফসল, শাক-সবজি উপজেলার সদর ও জেলা শহরে যায়। কিন্তু কৃষিপণ্য নিয়ে খাল পার হতে কৃষকরা ভোগান্তিতে পড়েন। শিশুদের বিদ্যালয়ে যেতে খাল পার হতে হয়। এই গ্রামের সঙ্গে অন্যগ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয়রা ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান। দাবির মুখে ব্রিজ না হয়ে সাঁকো নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সেটি দুই বছরের মাথায় নড়বড়ে হয়ে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ে। বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় ওই ভাঙা সাঁকোতে পারাপার হতে হচ্ছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, ভাঙা সাঁকোতে পারাপার হচ্ছেন মতিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়, চর কালকিনি মিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কে আলম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণমার্টিন হাজিপাড়া নূরানি মাদ্রাসা এবং নাছিরগঞ্জ কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা।
এসময় কথা হয় শিক্ষার্থী মিতু ও আতিকুরের সঙ্গে। তারা বলেন, গত তিন বছর ধরে সাঁকোটি ব্যবহার অনুপযোগী। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় এই পথেই ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়।
চর কালকিনি গ্রামের বাসিন্দা আবুল বাশার জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় কেউ এই গ্রামে আত্মীয়তা করতে চায় না। ছেলে-মেয়েকে বিয়ে করাতে বিপাকে পড়তে হয়।
বৃদ্ধ শাহ আলম ভান্ডারি বলেন, ‘ভাঙা হাক্কা (সাঁকো) দিয়ে চলাচল করা যাচ্ছে না। ভয়ে ভয়ে পার হতে হয়। এই যেন পড়ে গেলাম’।
ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, একটি ব্রিজের অভাবে অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে, ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুলে যেতে পারে না। কয়েকদিন আগে ঝুঁকি নিয়ে পার হতে গিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিশু পানিতে পড়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে। এমন পরিস্থিতির কারণে অনেক অভিভাবক তাদের শিশু সন্তানকে স্কুলে দিতে অনীহা প্রকাশ করছেন। এদিকে, কৃষকরা উৎপাদিত ফসল হাটে-বাজারে নিতে পারেন না। যে কারণে তারা ন্যায্যমূল্য পায় না।
স্থানীয় চর কালকিনি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফ উল্লাহ বলেন, বাত্তির খালের উপর একটি ব্রিজ নির্মাণ খুবই জরুরি। এ ব্যাপারে আবেদন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৮
এসআর/জেডএস