ঢাকা, রবিবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে কুপিয়ে জখম

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৮
যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে কুপিয়ে জখম আহত রুপালী। ছবি: বাংলানিউজ

লালমনিরহাট: লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় যৌতুক না পেয়ে এক গৃহবধূকে মারধর ও কুপিয়ে জখম করেছে তার  যৌতুক লোভী স্বামী ও শ্বশুর।

শুক্রবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাতে স্থানীয়রা নির্যাতিত গৃহবধূ রুপালী বেগমকে (২৪) উদ্ধার করে আদিতমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন।

আহত রুপালী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের বারঘড়িয়া আবলার বাজার এলাকার মানিক মিয়ার স্ত্রী।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, মহিষখোচা আবলার বাজার এলাকার আফজাল হোসেনের ছেলে মানিক মিয়া (৩০) প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে চার বছর আগে দ্বিতীয় বিয়ে করেন পার্শ্ববর্তী লালমনিরহাট সদর উপজেলার কালমাটি গ্রামের মৃত জসির উদ্দিনের মেয়ে রুপালীকে। বিয়ের পর থেকে মাঝেমধ্যেই যৌতুকের টাকার জন্য রুপালীকে চাপ দিতেন মানিক ও তার পরিবার। সব সময় মেয়ে জামাইয়ের চাহিদা মেটাতে পারতেন না রুপালীর বিধবা মা ফাতেমা বেগম।

এরই মধ্যে রুপালীর একটি মেয়ের জন্ম হয়। একপর্যায়ে মানিক ঢাকায় পোশাক শ্রমিক হিসেবে কাজে গিয়ে স্ত্রীর অনুমতি না নিয়ে তৃতীয় বিয়ে করে ঢাকায় থেকে যান। এর পর থেকে মানিকের নির্দেশে তার বাবা-মা-ভাই-ভাবিরা মিলে রুপালীকে বাড়ি ছাড়া করতে কারণে অকারণে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করে।

শুক্রবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে মানিক ঢাকার তৃতীয় স্ত্রীকে তালাক দিতে রুপালীর কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। রুপালী সেই টাকা দিতে ব্যর্থ হলে মানিক তার বাবা-মা ও ভাই মিলে লাঠি ও দা দিয়ে বেধম মারধর ও কুপিয়ে তাকে বাড়ি থেকে বাইরে ফেলে দেন। এতে রুপালীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয় ও বাম হাতে প্রচণ্ড আঘাত পান।  

পরে স্থানীয়রা আহত রুপালীকে উদ্ধার করে আদিতমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় রুপালী বাদী হয়ে স্বামী মানিক মিয়াসহ ওই পরিবারের পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

হাসপাতালের বেডে থাকা রুপালী বাংলানিউজকে জানান, ৫০ হাজার টাকা তার মায়ের কাছ থেকে এনে না দেয়ায় স্বামী মানিকসহ পরিবারের সবাই মিলে মারধর করে বাচ্চাটিকে আটকে রেখে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এক বছর ধরে এমন অমানুষিক নির্যাতন সহ্য করছেন তিনি। এ ঘটনার বিচার দাবি করেন তিনি।

আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক আব্দুস সালাম শেখ বাংলানিউজকে জানান, রুপালীর শরীরে মারধর এবং অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।  

আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা বাংলানিউজকে জানান, এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৮ 
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।